May 20, 2024
agartala,tripura
রাজ্য

মনীষীদের চিন্তাভাবনা ও দর্শন বর্তমান সময়েও আমাদের কাছে পাথেয় মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ভারতবর্ষ একটি সমৃদ্ধ কৃষ্টি ও সংস্কৃতির দেশ। এই দেশে বহু মনীষী জন্মগ্রহণ করেছেন। সেইসব মনীষীদের চিন্তাভাবনা, দর্শন ও আদর্শ বর্তমান সময়েও আমাদের কাছে পাথেয়। শিক্ষা-দীক্ষা থেকে শুরু করে সমাজ জীবনের নানা বিষয়ে মনীষীগণ যে নবজাগরণের ইতিহাস রচনা করেছিলেন তা স্মরণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আজ প্রজ্ঞাভবনে ভারতের নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়ের ২৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরির উদ্যোগে এবং ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ও রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ মনীষীগণ ভারত আত্মকে নতুনভাবে জাগ্রত করেছিলেন। তাদের জীবনাদর্শকে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। বর্তমানে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি আমাদের সমাজ জীবনকে গ্রাস করছে। আমাদের দেশের অতীত ঐতিহ্যকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাই আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে।

 

সেমিনারে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে রাজা রামমোহন রায় নানা সামাজিক আন্দোলন সংঘটিত করার পাশাপাশি শিক্ষামূলক সংস্কারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

 

গ্রহণ করেছিলেন। শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে তিনি ১৮১৭ সালে কলকাতায় হিন্দু কলেজ স্থাপন করেন। এর চার বছর পর স্থাপন করেন বেদান্ত কলেজ। রামমোহন রায় একেশ্বরবাদী মতবাদের শিক্ষাগুলিকে আধুনিক, পাশ্চাত্য পাঠ্যক্রমের সাথে অন্তর্ভুক্ত করতে জোর দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ইন্টারনেট যুগেও বইয়ের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। নিজেকে আবিষ্কারের অন্যতম উপায় হচ্ছে বই পড়া। আর বই পড়ার মূল রসদ হচ্ছে লাইব্রেরি। রাজ্যের বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরির ইতিহাসও খুব প্রাচীন। একটা সময় এই লাইব্রেরিতে পড়াশুনা করার জন্য পাঠকদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা লেগে থাকতো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লাইব্রেরি ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াস নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে সমাজও দ্রুত এগুচ্ছে। লাইব্রেরিতেও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন করা হয়েছে।

 

সেমিনারে কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরির ডিরেক্টর জেনারেল অজয় প্রতাপ সিং বলেন, মহিলাদের সামাজিক মর্যাদা প্রদানের লক্ষ্যে রাজা রামমোহন রায় বহু সামাজিক আন্দোলন করেছিলেন। এরমধ্যে সতীদাহের মতো নিষ্ঠুর সামাজিক প্রথার বিরুদ্ধে তার আন্দোলন ছিল অন্যতম। তৎকালীন সময়ে শিক্ষা সংস্কারেও তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে রাজা রামমোহন রায়ের অবদানকে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পৌছানোর লক্ষ্যেই এধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি দু’দিনব্যাপী এই সেমিনারের মাধ্যমে রাজা রামমোহন রায়ের জীবনী, ভাবধারা ও দর্শন সম্পর্কেও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা এবং রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের সদস্য ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর অরুণোদয় সাহা।

Leave feedback about this

  • Quality
  • Price
  • Service