জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- দিব্যাঙ্গজনরা অন্যদের থেকে কোনও অংশেই কম নয়৷ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দিব্যাঙ্গজন রানিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতার পরিচয় রাখছে। আজ আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে দু’দিন ব্যাপী রাজ্যভিত্তিক খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস-২০২৪-এর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
আর্ন্তজাতিক দিব্যাঙ্গজন দিবস ২০২৪ উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর যৌথভাবে খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমস-এর আয়োজন করেছে। এই প্যারা গেমস আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ধরণের খেলাধুলার আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিব্যাঙ্গজনদের মানসিক বিকাশের পাশাপাশি দেহ ও মনের সুস্থতা বাড়ায়৷
খেলাধুলার মাধ্যমে শৃঙ্খলাবোধ,অধ্যাবসায়, দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ এবং দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। তিনি বলেন, এই খেলো ত্রিপুরা প্যারা গেমসে দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট, দাবা, ক্যারম, ফুটবল ইত্যাদি বিভিন্ন ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান সরকার দিব্যাঙ্গজনদের সার্বিক সুবিধা ও সহয়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ, সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস ও প্রয়াস এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে এই সরকার কাজ করছে।দিব্যাঙ্গজনদের সহায়তায় খেলাধুলা, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা রাইটস অফ পার্সন্স উইথ ডিজেবিলিটিস রুলস-২০১৮ তে সরাসরি নিয়োগ ও পদন্নোতির ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ সংরক্ষণ এবং সরকারি অনুদান প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সংরক্ষণের সংস্থান রয়েছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ১৮ জনকে ইউনিক ডিজেবিলিটি আইডেন্টিটি কার্ড প্রদান করা হয়েছে।
১৫ হাজার ৯৮ জন দিব্যাঙ্গজনকে মাসিক ২ হাজার টাকা করে সামাজিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, দু’দিনের এই প্যারা গেমসে অনেকগুলি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আগে ৮০ শতাংশ ও তার বেশি বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা সামাজিক ভাতার আওতায় আসতেন।
বর্তমানে রাজ্যে ৬০ শতাংশ ও তার বেশী যোগ্য দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদের সামাজিক ভাতার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার দিব্যাঙ্গজনদের সুবিধার্থে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করেছে। তাদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে নীতিও গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠানের সভাপতি আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার অনুষ্ঠানে স্পেশাল অলিম্পিকস ভারত’র সভাপতি ড. মল্লিকা নাড্ডা বলেন, এই ধরণের ক্রীড়া কর্মসূচি আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিব্যাঙ্গ খেলোয়াড়দের দক্ষতা এবং তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম দিব্যাঙ্গ শব্দটিকে সামনে এনে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সম্মান প্রদর্শন করেছেন। দিব্যাঙ্গ খেলোয়াড়দের স্পেশাল অলিম্পিকস ভারতের সাথে যুক্ত হয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, অধিকর্তা তপন কুমার দাস, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা সত্যব্রত নাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ত্রিপুরা পলিসি ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ পার্সন্স উইথ ডিজেবিলিটিস ২০২৪ প্রকাশ করেন। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতি দিব্যাঙ্গ শিক্ষার্থীদের চিফ মিনিস্টারস মেধা পুরস্কার প্রদান করা হয়।মুখ্যমন্ত্রী তাদের হাতে চেক তুলে দেন। তাছাড়াও অনুষ্ঠানে দু’জন দিব্যাঙ্গজন ব্যাক্তিকে ইউনিক ডিজেবিলিটি আইডেন্টিটি কার্ড এবং দু’জন দিব্যাঙ্গজনকে সামাজিক ভাতা প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাদের হাতে সুবিধাগুলি তুলে দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগন অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে প্রদর্শিত বিভিন্ন স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।
Leave feedback about this