এইচআইভি রোধে সম্মিলিত লড়াইয়ের আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মণিক সাহা। তিনি বলেন, এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে জনসচেতনতা, দায়িত্ববোধ এবং সমাজের সম্মিলিত অংশগ্রহণই সবচেয়ে বড় শক্তি।

প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর সারা দেশের সঙ্গে সঙ্গে ত্রিপুরাতেও গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয় বিশ্ব এইডস দিবস। সরকারি দপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ—সবাই এদিন সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

এ বছরের থিম “Overcoming Disruption, Transforming the AIDS Response”—যা এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দৃঢ়তা ও নতুন উদ্ভাবনী পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার এইচআইভি সংক্রমণ রোধে এবং জনসচেতনতা গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সম্প্রতি এইচআইভি/এইডস আক্রান্তদের সেবাদানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ত্রিপুরাকে সম্মান জানিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ডাঃ সাহার কথায়, “আমাদের রাজ্যের প্রতিটি এইচআইভি আক্রান্ত মানুষকে সেবা দেওয়ার ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর। সব মূল্যেই এই রোগ নির্মূল করতে হবে।”

তিনি এইচআইভি সংক্রমণের চারটি প্রধান কারণ ব্যাখ্যা করেন—

১) আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক

২) পরীক্ষা না করা রক্ত দিয়ে রক্ত সঞ্চালন

৩) ব্যবহার করা সুচ বা সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তির মধ্যে ভাগাভাগি

৪) আক্রান্ত মা থেকে সন্তানের মধ্যে সংক্রমণ।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরে সচেতনতামূলক প্রকল্প চালু রয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলেও সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। সরকারি দপ্তরগুলোর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও সামগ্রিকভাবে রোগ প্রতিরোধে কাজ করছে।

এদিন তিনি মাদকাসক্তির বিষয়েও জনসাধারণকে সতর্ক করেন। বিশেষ করে ইনট্রাভেনাস (সুঁইয়ের মাধ্যমে) মাদকের ব্যবহার রাজ্যে এইচআইভি সংক্রমণ বাড়িয়েছে বলে তিনি জানান। মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, “আমাদের তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। সবাই মিলে মাদকমুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তুলুন।”

বিশ্ব এইডস দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজে সঠিক তথ্য তুলে ধরা এবং এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানো—এ কথা উল্লেখ করে ডাঃ সাহা সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, “জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই আমরা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে সফল হবো এবং একসময় একে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে পারব।”