2025-05-16
Ramnagar, Agartala,Tripura
রাজ্য

স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা তৈরি হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- জনকল্যাণে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রশাসন প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে। জনকল্যাণে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ প্রকৃত সুবিধাভোগীরা পাচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। সরকার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করেন টি.সি.এস. আধিকারিকরা। জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন নীতি নির্দেশিকা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তারা। আজ প্রজ্ঞাভবনে ২০২৪ সালের টি.সি.এস. ব্যাচের আধিকারিকদের ৬ মাস প্রশিক্ষণের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। সিপার্ড-এর উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী টি.সি.এস. আধিকারিকদের সাথে ফটোসেশনে মিলিত হন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যোগ্য ও মেধা সম্পন্ন ছেলেমেয়েদের প্রশাসনিক কাজে যুক্ত হওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। নবনিযুক্ত মেধাবী আধিকারিকরা রাজ্য প্রশাসনে যুক্ত হওয়ায় প্রশাসনিক শক্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মেধার পাশাপাশি পরিশ্রম করলে সফলতা আসে তা আজকের অনুষ্ঠানে পরিলক্ষিত হয়। স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর পুরোনো নিয়োগ নীতি বাতিল করে পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ নিয়োগ নীতি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দলীয় আনুগত্য না রেখে সরকারি চাকরি প্রদান করা হচ্ছে। জনকল্যাণে কাজ করলে মানুষ তা মনে রাখে। ভালো কাজে রাজনীতির কোনও স্থান নেই। সরকারের স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির ফলে আধিকারিকগণ দলীয় আনুগত্য ছাড়া কাজ করার সুযোগ পাবে।

তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। বর্তমানে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, আইন শৃঙ্খলা ইত্যাদি সমস্ত বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নবনিযুক্ত আধিকারিকদেরও রাজ্যের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী চাকরি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এছাড়া দক্ষ শ্রম শক্তি বাড়ানো ও গুণগত উৎকর্ষতার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তাই সময় সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পি.এম. কৌশল বিকাশ যোজনা, স্কিল ইন্ডিয়ার মত প্রকল্পের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতার উপরও জোর দিয়েছেন। ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতিতেও শৈশব থেকেই দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে টার্গেটেড এডুকেশন, স্কিল ইন্ডিয়ার উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল সাক্ষরতা চালু, বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারে কাজ করা হচ্ছে। ফলে এমপ্লয়মেন্ট ইনডেক্স উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া জারি রাখা হয়েছে। ধীরে ধীরে শূন্যপদগুলি পূরণ করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি রাজ্যেও প্রশাসনিক আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। সারা বছর রাজ্যের ও বহিরাজ্যের বহু প্রশিক্ষণার্থীরা ত্রিপুরায় এসে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ২০০১ থেকে সিপার্ডে এখন পর্যন্ত টি.সি.এস.-এর ১৯টি ব্যচে ৫৯৬ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সেখানে হিউমান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ফৌজদারি আইন, প্রশাসনিক বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের জন্য স্বচ্ছ প্রশাসন পরিচালনার লক্ষ্যে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার অভাব অভিযোগের নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে জেলাশাসকদের সাথে ভার্চুয়ালি বৈঠক করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নবনিযুক্ত আধিকারিকদের বিপর্যয় মোকাবিলা প্রশিক্ষণ সহ ভূমি ও রাজস্ব বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন। স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রশাসনিক কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আধিকারিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা জনকল্যাণে কাজ করে বিকশিত ত্রিপুরা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য আধিকারিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি গ্রামীণ মানুষের আর্থিক উন্নয়নের মাধ্যমে রাজ্যের বিকাশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে সিপার্ড-এর অধিকর্তা সচিব অপূর্ব রায় টি.সি.এস. আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন সিপার্ড-এর রেজিস্ট্রার ড. সুমিত রায় চৌধুরী।উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের টি.সি.এস. ব্যাচে মোট ৩০ জন সিপার্ডে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবেন।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service