2024-11-08
agartala,tripura
রাজ্য

সাড়া দেশের জন্য সকল নাগরিকদের জন্য একটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড হয় : আলোক কুমার

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-
পুরাতন আগরতলার খয়েরপুর সেবাধামে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ত্রিপুরা উপপ্রান্তের পক্ষ থেকে রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এদিন ভি এইচ পি’র কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি আলোক কুমার একে একে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন। ইদানিং বহু চর্চিত ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে তিনি সংগঠনের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচার ধারা তুলে ধরে বলেন ভারতের সংবিধানের ৪৪ নং ধারায় বলা হয়েছে যে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার সমূহ সকলে চেষ্টা করবে যাতে সাড়া দেশের জন্য সকল নাগরিকদের জন্য একটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড হয়। সমান নাগরিক সম্যতা হউক। এটা সাংবিধানিক বিধি। এদিন তিনি জানান কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ল কমিশন এটার ওপর চিন্তাধারা করছেন এতে তাঁরা সন্তুষ্ট। তবে এই চিন্তাধারা খুব শীঘ্রই পূর্ণ হউক এটাই তাঁরা প্রত্যাশা করেন। পাশপাশি সংগঠন এমনটাও মনে করে যে সব পক্ষের কাছ থেকে মতামত নেওয়া দরকার। সবাইকে যার যার কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। যেখানে যেখানে যে দিকগুলি খুবই ভাল তা গ্রহণ করা। হিন্দু , মুসলিম, খ্রিস্টান প্রভৃতি সবার জন্য আইনের ক্ষেত্রে যা যা ভাল দিক সে গুলি যাতে গ্রহণ করে একটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড হয়।প্রসঙ্গত এদিন ভি এইচ পি’র কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি আলোক কুমার বলেন সংবিধানের ২৪৪ ও ৩৭১ ধারা, ষষ্ঠ তফশিল এবং অন্য জায়গায় এই দেশে জনজাতিদের জন্য বেশ কিছু রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বেশ কিছু প্রতিজ্ঞাও করা হয়েছে। তাই এই সব রক্ষাকবচ ও প্রতিজ্ঞাকে বিবেচনায় রেখেই এই ইউনিফর্ম সিভিল কোড করা দরকার। এই সকল বিষয়গুলিকে নজরে রেখে তাদের নিজস্ব কাস্টমারি ল ইত্যাদি সকল বিষয়ে যথোপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করে যে যে বিষয় গুলিতে একমত হওয়া যায় কেবল সেই গুলো নজরে রেখে ইউনিফর্ম সিভিল কোড হউক এমনটাই মনে করেন তিনি। তিনি বলেন সংবিধানের প্রস্তাবনায় মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানের ধারা ১৪ তে যে সাম্যতার কথা বলা হয়েছে। সে দিকে নজর রেখে নারীদের গরিমা ও সমানতার প্রতি নজর প্রদান করলে একজন পুরুষ চার – চারজন নারীদের বিবাহ করবেন তা ঠিক নয়। কিংবা একতরফা তালাক তাও ঠিক নয়। তালাক দেবার পর তাকে মাঝ পথে ছেড়ে দেওয়া ও তাঁর ভরন পোষণের ব্যবস্থা না করা তা ঠিক নয়। এমন কি স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী তাঁর স্বামীর জায়গা সম্পত্তির ভাগ পাবে না তাও ঠিক নয়। তাই নারীদের গরিমা, মর্যাদা, জেন্ডার জাস্টিস ইত্যাদির প্রতি নজর প্রদান করে তা ইউনিফর্ম সিভিল কোডের অন্তর্ভুক্ত হউক এবং এক ব্যক্তি একটি বিবাহ তা সকলে সমর্থন করুক।তিনি জানান এদিন মনিপুরের ব্যাপারেও এখানে আলোচনা করা হয়েছে। এটা বড় কথা সেখানে শান্তি স্থাপন হচ্ছে। সংগঠন মনে করে যারা বিভিন্ন শিবিরে রয়েছেন তারা যাতে যার যার ঘরে ফিরতে পারে সে ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। সেই সকল ত্রান শিবিরে তাদের সেবার কাজে নিয়োজিত রয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এই হিংসায় যে সকল মন্দির গুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সে গুলি সংগঠন পুনঃনির্মাণ কিংবা সংস্কার করবে বলে এই বৈঠকে স্থির করা হয়। এদিন তিনি বলেন জঙ্গলে কব্জা করে রাখা, গাঁজার চাষ, ড্রাগস এর চোরাচালান এই বিষয়গুলির উপর আন্দোলন জারি থাকা বাঞ্ছনীয়। মায়ানমার থেকে লোকদের আসা বন্ধ হউক। জঙ্গলের জমি পুনরুদ্ধার করা ও গাঁজা বা আফিম এর চাষের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করা সহ ড্রাগস এর কারবার বন্ধ হউক। এই সব দিক বিচার বিবেচনা করে মনিপুরে শান্তি ফিরে আসুক এটাই কাম্য। এদিন তিনি ত্রিপুরায় জনজাতিদের মধ্যে বিশেষ করে ধর্ম পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন ভারতে ধর্ম পরিবর্তনের ছাড় সংবিধানে রয়েছে। কিন্তু তা লোভ দেখিয়ে করা যায় না। তাই রাজ্যে ধর্ম পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। রাজ্য সরকার অবৈধ ধর্মান্তকরন বন্ধ করতে একটি কার্যকরী আইন প্রণয়ন করুক এবং তা লাগু করুক এই দাবি এদিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে করেন তিনি।এদিন তিনি জানান হিন্দু সমাজ একত্রিত ও সংগঠিত। এই বার্তা প্রদানে রাজ্যে বজরঙ দল প্রত্যেক ব্লকে ৩১ অক্টোবর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর শৌর যাত্রা বের করবে। দিপাবলিতে সন্তরা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে, শহরের বস্তি এলাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় যাবেন। জনগণকে দর্শন দেবেন। জানুয়ারিতে অযোধ্যায় ভগবান রামচন্দ্রের অভিষেক হবে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি রাজ্যের প্রত্যেক নদী, জলাশয়, কুয়ো থেকেও পবিত্র জলরাশি সংগ্রহ করা হবে। তা অযোধ্যায় পাঠানো হবে। বিশ্বের পুন্য স্থান গুলির জলের সাথে এই সংগৃহীত জল মিশিয়ে ভগবান রামচন্দ্রের অভিষেক হবে।
এদিন তিনি জানান তারা রাজ্যে সংগঠনের সেবা কাজেরও খোঁজ খবর নিয়েছেন। এখানে সংগঠনের বিস্তার আরও প্রয়োজন। পাশাপাশি শিক্ষা, কৌশল, স্বাস্থ্য, ও তাদের স্বরোজগারি এই দিক গুলির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সংগঠন সামনের দিন গুলিতে লক্ষ মাত্রা রেখে কাজ করবে বলেও এদিন জানান তিনি। এই সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন আলোক কুমার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গুয়াহাটি কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক দীনেশ কুমার তিওয়ারি সহ অন্যান্যরা।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service