2025-02-06
Ramnagar, Agartala,Tripura
রাজ্য

যেমন ছিলো বামের সময়ে ঠিক তেমনই আছে রামের আমলে

তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি :- “স্বর্ণযুগ” গিয়ে “হীরাযুগ” ফিরে এলেও সমাজের কিছু কিছু একাংশ গরিব ও নিরন্ন মানুষদের ভাগ্যের হাল-হকিকৎ এখনও পরিবর্তন হয় নি । যেমন ছিলো বামে ঠিক তেমনই আছে রামে । পরিচালন রীতি রয়ে গেছে অনেকটা সেই তিমিরেই । যা মূলতঃ বর্তমানে শাসক বিজেপির বড়ো বড়ো মাথা তথা নেতা-আমলারা এইসব দৃশ্যপট দেখেও অনেকটা না দেখার মতো ভান করে চলছে । যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রীতিমতো একপ্রকার ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে গোটা তেলিয়ামুড়া মহকুমা জুড়েই । এইবার কোন গিরি বা প্রত্যন্ত এলাকার কেউ নয় এবার আমাদের তেলিয়ামুড়া মহকুমাধীন শহরের উপকন্ঠ তথা তেলিয়ামুড়া শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরবর্তী বাইশগড়িয়া এলাকায় এক পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক মহিলা বর্তমান সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা না পেয়ে বঞ্চিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই । এই পঞ্চাশোর্ধ মহিলার বর্তমান জীবনযাপনের অবস্থা দেখলে রীতিমতোই চোখ অনেকটা কপালে উঠার মতো অবস্থা হয়ে যায় । উল্লেখ্য, জীবন সংগ্রামের শেষ প্রান্তে চলে এসে আজও সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে পঞ্চাশোর্ধ এই বয়স্ক মহিলা । এই বয়স্ক মহিলার নাম অঞ্জলি ভৌমিক । বাড়ি তেলিয়ামুড়া মহকুমাধীন ২৯ কৃষ্ণপুর বিধানসভার অন্তর্গত বাইশগড়িয়া এলাকায় । ঘটনার বিবরণে জানা যায়, তেলিয়ামুড়া মহাকুমার অধীন বাইশগড়িয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী অঞ্জলি ভৌমিক আজও সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বরাবরের মতোই বঞ্চিত হয়ে আসছে । জানা যায়, তাঁর স্বামী হরেন্দ্র ভৌমিক সহ দুই ছেলেও আজ মৃত । এই ভুবনে তাঁর কাছের মানুষ বলতে কেউ নেই । সে আজ খুবই একা ও দৈন্যদশায় জীবনযাপন করে চলছে । কিন্তু বিজেপি সরকার রাজ্যের মসনদে বসার ৩ বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও আজও কোন প্রকার একটুও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে নি শাসক বিজেপির কোন নেতা-বিধায়করাই । উল্লেখ্য, বাইশগড়িয়া এলাকার গরিব নিপীড়িত ও বঞ্চিত অঞ্জলি ভৌমিকের বাড়িতে দেখার মতো শুধু ছোট্ট একটি মাথা গোঁজার বসতঘর ছিল । কিন্তু উল্লেখ্য, আজ থেকে দীর্ঘ দু-মাস পূর্বে তথা চৈত্র মাসে ঝড় তাণ্ডবের কারণে অঞ্জলি ভৌমিকের ছোট্ট একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে সেই বসত ঘরটির মধ্যেখানে একটি গাছ পড়ে যাওয়াতে ঘরটির অর্ধাংশ ভেঙে চুরমার হয়ে যায় । আর বাকি অর্ধাংশটুকুর মধ্যেই পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক মহিলা মৃত্যুকে সাথে নিয়েই আজও দিনযাপন করে চলছে । কিন্তু এরপর বাইশগড়িয়া এলাকা থেকে শুরু করে তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন নেতা আমলাদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্নভাবে অবগত করা হলেও নেতা আমলারা অনেকটা নামকাওয়াস্তে দফায় দফায় নিরন্ন ও বঞ্চিত অঞ্জলি ভৌমিকের বাড়িতে গিয়ে বাড়ির দৃশ্যপট প্রত্যক্ষ করে চলে আসে । তৎসঙ্গে চলে নেতা-আমলাদের প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি । বাস্তবে অঞ্জলি ভৌমিকের বাড়ির কোন হাল হকিকৎ আজও ফেরে নি । রয়ে গেছে সেই তিমিরেই । আজও অঞ্জলি ভৌমিক মৃত্যুকে একপ্রকার সাথে নিয়েই সেই দুর্যোগপূর্ণ বসতির মধ্যে দিন যাপন করে চলেছে । উল্লেখ্য, পঞ্চাশোর্ধ অঞ্জলি ভৌমিক বাম আমল থেকেই রেগার কাজের মাধ্যমেই তিনি জীবন অতিবাহিত করে আসছে । কিন্তু জোট শাসনাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় বসে সেই নিয়মিত রেগার কাজটুকু একপ্রকার বরাবর বন্ধই করে দিয়েছে বলা চলে । ফলে ওই মহিলাকে ঘরের এক কোণে অনেকদিন খালি পেটেই পড়ে থাকতে হয় । কখনো কখনো পার্শ্ববর্তী মহিলারা এই করুণ ছবি দেখে ওই মহিলাকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে কিছুটা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় । এরপর যেই ঘটনাটিকে ঘিরে বর্তমান সরকারের প্রতি ঘৃণ্য মনোভাব পোষণ করেছে স্থানীয় জনগণ সেটি হলো এই মহিলার রেশন কার্ডে স্পষ্টতই উল্লেখ রয়েছে APL. জীবনের শেষ প্রান্তে চলে এসেও এই পঞ্চাশোর্ধ নিরন্ন ও গরিব অঞ্জলি ভৌমিক BPL রেশন পরিষেবা পায় নি । এই নিয়ে বর্তমান শাসক বিজেপি’র কার্যকলাপ ও নীতি-আদর্শের প্রতি এক প্রকার ক্ষোভ ছুঁড়ে দিলেন বঞ্চিত ওই মহিলা সহ গোটা এলাকাবাসী । এখন স্থানীয় সাধারণ জনগণ সহ অঞ্জলি ভৌমিকের সরকারের কাছে একটাই দাবি সরকার ও প্রশাসনের আমলারা যেন মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন । এখন দেখার বিষয় সংবাদ পরিবেশনের পর আদৌও অঞ্জলি ভৌমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন ও তেলিয়ামুড়ার নেতা আমলা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের কুম্ভনিদ্রা ভাঙে কি না ।।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service