জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- ভারতের জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ তম বর্ষ উদযাপনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্দিরা গান্ধী ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বছরব্যাপী এই উদযাপনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এই উপলক্ষে তিনি ‘বন্দে মাতরম’-এর স্মারক ডাকটিকিট ও স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি উদ্বোধন করেন বিশেষ ওয়েব পোর্টাল “vandemataram150.in”, যেখানে নাগরিকেরা জাতীয় গান গাওয়ার নিজের ভিডিও আপলোড করে ডিজিটাল সার্টিফিকেট পেতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘বন্দে মাতরম’ কোনো সাধারণ গান নয়, এটি এক মহান মন্ত্র—শক্তির, স্বপ্নের, এবং মাতৃভূমির প্রতি অগাধ ভক্তির প্রতীক। তিনি আরও বলেন, “এই গান আমাদের অতীতের ইতিহাসে ফিরিয়ে নিয়ে যায়, বর্তমানকে আত্মবিশ্বাসে ভরিয়ে তোলে এবং ভবিষ্যতের জন্য সাহস যোগায়—যাতে যে কোনো সংকল্প সফল হতে পারে, কোনো লক্ষ্যই অপ্রাপ্য নয়।”
মোদী বলেন, ব্যাঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘বন্দে মাতরম’ রচনা করে স্বাধীন, ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ ভারতের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার বলেছিলেন—ব্যাঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ কেবল উপন্যাস নয়, এটি স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনা, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা।
মঞ্চে বক্তব্যে গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেন, ‘বন্দে মাতরম’ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হৃদয়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং আজও সেই গান ভারতীয়দের দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত করে। তিনি আরও বলেন, এই গান আজও ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর মন্ত্র হিসেবে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর শক্তিকে একসূত্রে বাঁধছে।
উদযাপনের অংশ হিসেবে সারাদেশে জনসমাগমে একযোগে ‘বন্দে মাতরম’ গাওয়া হয়, যেখানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ‘বন্দে মাতরম’ ১৮৭৫ সালের অক্ষয় নবমীতে ব্যাঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচনা করেন এবং পরে তাঁর উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’-এর অংশ হিসেবে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। মাতৃভূমিকে শক্তি, ঐশ্বর্য ও দেবত্বের প্রতীক হিসেবে আহ্বান করে এই গান আজও ভারতের ঐক্য ও জাতীয় গর্বের এক অমর প্রতীক হয়ে আছে।





Leave feedback about this