জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ছাত্রছাত্রীরা হচ্ছে দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই তাদের সামাজিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে গুণগত শিক্ষা প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে সহর্ষ কর্মসূচিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর, এসসিইআরটি এবং লভ্য ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক সহর্ষ উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সহর্ষ কথাটির অর্থ হচ্ছে আনন্দ। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আনন্দের সাথে লেখাপড়া করাই হচ্ছে সহর্ষ কর্মসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য। জাতীয় শিক্ষানীতির নীতি নির্দেশিকা মাথায় রেখেই রাজ্যের শিক্ষাবিদ, প্রশিক্ষকরা এই কর্মসূচি তৈরী করেছেন। এই কর্মসূচিটি রাজ্যে সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগের চিরাচরিত পঠন-পাঠন ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিহা লক্ষ্য করা যেত। ফলে বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রছাত্রীদের ড্রপআউটের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সহর্ষ কর্মসূচি বাস্তবায়ণের ফলে বর্তমানে বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অনেকটাই বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাচীনকালে ভারতবর্ষের শিক্ষাব্যবস্থা অনেক উন্নত ছিল। বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা নালন্দা ও তক্ষশিলার মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে আসত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিক্ষা ব্যবস্থার এই ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশে ৩৪ বছর পর জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, শিশুদের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে তা বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। সহর্ষ কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের সুপ্ত প্রতিভাগুলিকে তুলে ধরতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। তবেই সহর্ষ কর্মসূচিটি সফলতা পাবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, সহর্ষ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রায় ৫ হাজার বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠরত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক, মানসিক বিকাশ এবং মূল্যবোধ গড়ার লক্ষ্যে কর্মসূচিটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লভ্য ফাউন্ডেশনের সিইও রিচা গুপ্তা ত্রিপুরা শিক্ষা ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা অধিকর্তা এন সি শর্মা এবং এসসিইআরটি’র অধিকর্তা এল দার্লং।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সহর্ষের জিঙ্গেল বাজানো হয় এবং এই কর্মসূচির উপর একটি তথ্য চিত্র পদর্শিত হয়। সহর্ষ কর্মসূচি রাজ্যে সফলভাবে বাস্তবায়ণের জন্য শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, এসসিইআরটি’র অধিকর্তা এল দার্লং এবং লভ্য ফাউন্ডেশনের সিইও কে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। এছাড়াও রাজ্যে সহর্ষ কর্মসূচি বাস্তবায়ণে উৎকর্ষতায় জন্য এসসিইআরটি’র ওএসডি পার্থ প্রতিম আচার্য সহ রাজ্যের ৮টি জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিক এবং ২৩ জন মাস্টার ট্রেনারকেও সম্মাননা প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও ১০০টি মডেল স্কুলকেও শংসাপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহর্ষ পোস্টার, সহর্ষ প্রোগ্রাম রিপোর্ট এবং ১০দিন ব্যাগ বিহীন মডিউল এর আবরণ উন্মোচন করেন।
Leave feedback about this