জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত ২০২৫ সালের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সমতুল মাদ্রাসা আলিম, মাদ্রাসা ফাজিল কলা ও মাদ্রাসা ফাজিল থিওলজির ফলাফল আজ প্রকাশ করা হয়েছে। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৮৬.৫৩ শতাংশ এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৭৯.২৯ শতাংশ। ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ড. ধনঞ্জয় গণ চৌধুরী আজ পর্ষদের মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সংবাদ জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি জানান, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের ১০ ১৯টি বিদ্যালয়ের ২৯ হাজার ৬৭০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসে। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৬১ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ১৫ হাজার ৮০৯ জন। মোট পাশ করেছে ২৫ হাজার ৬৭৩ জন। ফেল করেছে ৮২৭ জন। ৩৪৫টি স্কুলে ১০০ শতাংশ পাশ করেছে। ১০০ শতাংশ ফেল একটি স্কুলেও নেই। ৩১৬৯ জন ছাত্রছাত্রীর বছর বাঁচাও পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা রয়েছে। পাশের হার বিচারে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ জেলা, গোমতী জেলা ও সিপাহীজলা জেলা।
ধলাই জেলার কমলছড়া হাইস্কুলের ছাত্র রোমিও রাঙ্ঙ্খল পায়ে লিখে এবছর মাধ্যমিক পাশ করেছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ১৬৫। পর্ষদ সভাপতি আরও জানান, এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের ৩৭৩টি স্কুলের ২১ হাজার ৫০৬ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসে। এর মধ্যে ছাত্র ৯৯২০ জন। ছাত্রী ১১ হাজার ৫৮৬ জন। পাশ করেছে ১৭ হাজার ৫২ জন। ফেল করেছে ১৪৪২ জন। বছর বাঁচাও পরীক্ষায় বসতে পারবে ৩০০২ জন। ৩৯টি বিদ্যালয়ে ১০০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাশ করেছে। ১০০ শতাংশ ফেল করেছে ৩টি স্কুলে। পাশের হার বিচারে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে সিপাহীজলা জেলা, দক্ষিণ জেলা ও পশ্চিম জেলা।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদের সচিব ড. দুলাল দে জানান, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি। শেষ হয় ১৮ মার্চ। মোট ৬৮টি কেন্দ্রে মাধ্যমিক পরীক্ষা গৃহীত হয়। মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে রেগুলার ২৮ হাজার ৬১৩ জন, কন্টিনিউইং ৩০৩ জন, কম্পার্টমেন্টাল ৬১১ জন, Ext-compartmental ২৬ জন, এক্সাটার্নাল ১১৬ জন এবং অন্যান্য ১ জন ছাত্রছাত্রী ছিল। মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষার্থী ছিল ১১১ জন। পাশ করেছে ৭৩ জন। ফেল করেছে ১৪ জন। বছর বাঁচাও পরীক্ষার সুযোগ পেয়েছে ২৪ জন। দিব্যাঙ্গজন পরীক্ষার্থী ছিল ১৬৬ জন। পাশ করেছে ১১০ জন। তিনি আরও জানান, এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি। শেষ হয় ২২ মার্চ। ৬০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মধ্যে রেগুলার ২০ হাজার ৭৬৭ জন, কন্টিনিউইং ৩২৪ জন, কম্পার্টমেন্টাল ২৮৭ জন, Ext-compartmental শূন্য, এক্সাটার্নাল ১১২ জন এবং অন্যান্য ১৬ জন পরীক্ষার্থী ছিল। দিব্যাঙ্গজন পরীক্ষার্থী ছিল ৯৮ জন। পাশ করেছে ৭০ জন।
বাণিজ্য বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৪৫৯ জন। পাশ করেছে ৪০৫ জন। বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ২১৮৪ জন। পাশ করেছে ২১৫০ জন। হিউমেনিটিস বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১৮ হাজার ৭৯৫ জন। পাশ করেছে ১৪ হাজার ৪৩৫ জন। মাদ্রাসা ফাজিল কলা বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১৮ জন। পাশ করেছে ১৫ জন। মাদ্রাসা ফাজিল থিউলোজিতে পরীক্ষার্থী ছিল ৫০ জন। পাশ করেছে ৪৭ জন। তিনি জানান, মাধ্যমিকের উত্তরপত্র মূল্যায়ণের কাজ ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়। শেষ হয় ২০ এপ্রিল। উচ্চমাধ্যমিকের উত্তরপত্র মূল্যায়ণের কাজ ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়। শেষ হয় ২২ এপ্রিল। তিনি জানান, মার্কশিট খুব শীঘ্রই দেওয়া হবে। কোন ছাত্রছাত্রী খাতা রিভিউ করতে চাইলে আগামী ৭ থেকে ৯ মে-র মধ্যে নিজ নিজ স্কুলে ফর্ম জমা দেবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৩-মে-র মধ্যে পর্ষদে পূরণ করা ফর্ম জমা দেবেন।
জুন মাসে বছর বাঁচাও পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে পর্ষদ সভাপতি এবছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকার ছাত্রছাত্রীদের সাফল্যের চিত্রও তুলে ধরেন। তিনি বলনে, এটা প্রভিশন্যাল ফলাফল। পুরো এক্সামিনেশান প্রসেস শেষ হলে ১০ জন কৃতির নাম ঘোষণা করা হবে। তিনি এবারের সকল পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ণের কাজে নিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকা ও বিভিন্ন দপ্তরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
Leave feedback about this