জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- সভ্যতা ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্যে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট ক্লাসরুম ছাত্রছাত্রীদের আরও স্মার্ট হতে সাহায্য করবে। স্মার্ট ক্লাসরুমের পড়াশুনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি করে বিদ্যালয়মুখী হবে। আজ উমাকান্ত একাডেমিতে সমগ্র শিক্ষার অধীনে রাজ্যের ৭৫২টি বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরুমের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নিপুগ ত্রিপুরা হ্যান্ডবুকের আবরণ উন্মোচন এবং বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলিতে রিয়েল টাইম মনিটরিং ড্যাসবোর্ড বিদ্যাদর্পণের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের জন্য ৮১২টি বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরুম চালুর মঞ্জুরি দিয়েছিল। আজ ৭৫২টি স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুমের উদ্বোধন হলো। এরমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৪৪টি এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২৮টি। প্রতিটি স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। স্মার্ট ক্লাসরুমগুলিতে ল্যাপটপ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। যার মাধ্যমে শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করবেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য ও কৃষি রাজ্য সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। গুণগতমান বজায় রেখে রাজ্যের ছেলেয়েমেদের শিক্ষা প্রদানই হচ্ছে সরকারের মূল লক্ষা। সেই লক্ষ্য পূরণে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা আগে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বহিরাজ্যে চলে যেতো। বর্তমানে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্যেই উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারে
সেরকম পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে সাধারণ ডিগ্রি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আইন বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ সহ সরকারি ও বেসরকারি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলিকে ভিত্তি করেই আগামীদিনে রাজ্যে এডুকেশন হাব গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়েই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি অর্থবরাদ্দ রাখা হয়েছে। পিএম-শ্রী প্রকল্পে মাধ্যমে প্রতিটি ব্লকে একটি করে মডেল স্কুল স্থাপন করা হবে। এরজন্য এবারের বাজেটে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সমাজের দুর্বল ও অনগ্রসর ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে ভর্তির আবেদনের সুবিধার্থে একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছাত্রীদের মধ্যে ৪৪ হাজার ৬০০টি বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৩২৪ অর্থবছরেও ছাত্রীদের বাইসাইকেল দেওয়া হবে। এজন্য বাজেটে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা” নামে একটি নতুন পরিকল্পনার মাধ্যমে দ্বাদশমান পরীক্ষায় প্রথম ১০০ জন স্থানাধিকারী ছাত্রীকে বিনামুলো স্কুটি দেওয়া হবে। রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়নের লক্ষ্যে পিএম-শ্রী ও বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে ৪০০টি সরকারি বিদ্যালয়ের আধুনিকীকরণ করা হবে। এজন্য আগামী ৫ বছরে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে দেশ সেবায় উৎসাহিত করতে রাজ্য সরকার প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘ত্রিপুরা অগ্নিবীর’ কর্মসূচি চালু করা হবে। রাজ্যের দিব্যাঙ্গ দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা লাভে উৎসাহিত করতে ‘চিফ মিনিস্টার্স স্পেশাল স্কলারশিপ’ চালু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে ৫ হাজার টাকা এবং ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য ৪ হাজার টাকা করে মাসিক বৃত্তি প্রদান করা হবে। রাজ্যের ১১টি সাধারণ ডিগ্রি কলেজে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের হায়তায় বৃষ্টিমূলক পাঠ্যক্রম চালু হয়েছে। উদয়পুরের নেতাজি সুভাষ মহাবিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ৪০ কোটি টাকা, মহারাজা বীরবিক্রম কলেজে নতুন সায়েন্স বিল্ডিং-এর জন্য ৭৭ কোটি টাকা এবং ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড ভান্সড স্টাডিস ইন ইন এডুকেশনের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকার
ব্রাদ্দ এবারের বাজেটে রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী বলেন, রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করাই হচ্ছে স্মার্ট ক্লাসরুমের প্রধান উদ্দেশ্য। স্মার্ট ক্লাসরুমের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার প্রতি আরও আগ্রহ বাড়বে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মধ্যশিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা চাদনি চন্দ্রন বুনিয়াদি শিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সহ অন্যান্য অতিথিগণ উমাকান্ত একাডেমির স্মার্ট ক্লাসরুম ও অটল টিকরিং লাব পরিদর্শন করেন এবং ছাত্রদের সাথে মতবিনিময় করেন।
রাজ্য
প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘ত্রিপুরা অগ্নিবীর’ কর্মসূচি চালু করা হবে : মুখ্যমন্ত্রী
- by janatar kalam
- 2023-07-21
- 0 Comments
- Less than a minute
- 2 years ago
Leave feedback about this