জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-আর্থিক সীমাবদ্ধতা প্রকৃত প্রতিভার বিকাশ এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী স্কলারশিপ ফর অ্যাচিভারস টুয়ার্ডস হায়ার লার্নিং (সিএম-সাথ) প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল সরকারি সহায়তার মাধ্যমে মেধাবী অথচ আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত সিএম-সাথ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কাজের মাধ্যমেই মানুষের আস্থা অর্জনে বিশ্বাসী। এই সরকার মানুষের স্বার্থে যেসব কাজের কথা উল্লেখ করেছিল, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই সরকার চায় আর্থিক প্রতিবন্ধকতার জন্য যেন কোনও মেধা হারিয়ে না যায়। সেই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিএম-সাথ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকারের সিএম-সাথ প্রকল্পের মাধ্যমেই ছাত্রছাত্রীদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এমন নয়। কিন্তু এই প্রকল্প ছাত্রছাত্রীদের লক্ষ্য পূরণে উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষাই হলো মানব জাতির মূল শক্তি। এর মাধ্যমেই নিজের বিকাশ এবং আত্মনির্ভরতা গড়ে উঠে। শিক্ষার মাধ্যমেই জাতির প্রকৃত বিকাশ ঘটে। যে যত বেশি শিক্ষিত, সমাজে তার ততবেশি কদর। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উক্তি উল্লেখ করে বলেন, যুব সম্প্রদায়ই ভারতের ভবিষ্যৎ। তাদের সঠিক এবং গুণগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে পারলেই দেশ শ্রেষ্ঠত্বের দিকে এগিয়ে যাবে। এই লক্ষ্যপূরণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চিন্তা, চেতনা, দক্ষতা, উদ্ভাবনী ধারণা, আর্থিক সীমাবদ্ধতায় শিক্ষা চালু রাখা, মহিলা স্বশক্তিকরণ, আত্মনির্ভরতা, দেশপ্রেম ইত্যাদি সব বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির উপর ভিত্তি করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে গুণগত শিক্ষার বিকাশে রাজ্যেও শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি ‘নিপুণ ত্রিপুরা’ প্রকল্প, বিদ্যা সেতু মডিউল, মিশন মুকুল কর্মসূচি, সহর্য কার্যক্রম, পি.এম. পোষণ প্রকল্প, বিদ্যাজ্যোতি স্কুল চালু করা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইপ্যাড বা ট্যাব বিতরণ, নবম শ্রেণির ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে বাইসাইকেল প্রদান, পি.এম-শ্রী স্কুল চালু করা, ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন চালু, নতুন নতুন কলেজ চালু করা, আই আই আই টি. স্থাপন, মহিলা মহাবিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ ইত্যাদি সফলতার চিত্র তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, আজকের ছাত্রছাত্রীরাই ভবিষ্যতের শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার প্রধান কারিগর। রাজ্য সরকার ত্রিপুরাতে এডুকেশন হাব গড়ার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের সাফল্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন.সি. শর্মা। তিনি সি.এম-সাথ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করেন। শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, বর্তমানের ছাত্রছাত্রীরাই ভবিষ্যতে রাজ্য ও দেশের নাম উজ্জ্বল করবে। তিনি ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং-এর গুরুত্বের কথাও উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা রাজীব দত্ত, এসসিইআরটি-র অধিকর্তা এল ডার্লং। উল্লেখ্য, আজ এই অনুষ্ঠানে সারা রাজ্য থেকে সিএম-সাথ প্রকল্পে ২০০ জন নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৩২ জনের হাতে প্রতীকী হিসাবে রেপ্লিকা চেক তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা তাদের হাতে সেই চেক তুলে দেন।





Leave feedback about this