জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-সুরসম্রাট শচীন দেববর্মণ ছিলেন দেশের একজন লিজেন্ড ব্যক্তি। যিনি সুর সাধনার মাধ্যমে ভারতবর্ষ সহ সারা বিশ্বেই সুনাম অর্জন করেছিলেন। তাঁর অনবদ্য সৃষ্টিগুলি আজও আমরা উপভোগ করি। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের লবিতে সুর সম্রাট শচীন দেববর্মণের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংগীত চর্চার নির্দিষ্ট কোন সীমারেখা নেই। মানুষের মনের খোরাক সংগীতের মাধ্যমেই সম্পৃক্ত হয়। শচীন দেববর্মণের সুরাপিত গানের মাধ্যমে আমরা নিজেদের খুঁজে পাই। পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করতেও গানের ভূমিকা অপরিসীম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত শচীন দেববর্মণ ৮টি বাংলা এবং ৮৯টি হিন্দি সিনেমায় গানের সুর দিয়েছিলেন, যা আজও সমান জনপ্রিয়।
এছাড়াও তিনি বাংলা এবং হিন্দিতে প্রায় ২০০টির মতো গান রেকর্ড করেছিলেন। শচীন দেববর্মণ ধ্রুপদী এবং লোকসংগীতের সংমিশ্রনে এক অনবদ্য সৃস্টি করেছিলেন। ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। পাশাপাশি তিনি ২টি ফিল্ম ফেয়ার পুরষ্কার সহ বহু পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংগীত সমাজ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়েও অনেক কবির লেখা গান দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। শচীন দেববর্মণ তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে জাতি জনজাতির মধ্যে প্রকৃত মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশকে অর্থনৈতিক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গড়ে তোলা। রাজ্য সরকারও সেই দিশায় কাজ করছে। তিনি বলেন, রাজ্যের ছেলে মেয়েদের মধ্যে ক্রীড়া, সংগীত সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিভা রয়েছে। শচীন দেববর্মণের সৃষ্টিগুলিকে পাথেয় করেই নিজস্ব সৃষ্টি তৈরী করার উপরও আগামী প্রজন্মের শিল্পীদের গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ভারতীয় সংগীত জগতের অন্যতম কিংবদন্তী ছিলেন শচীন দেববর্মণ। তিনি ছিলেন একাধারে সংগীতজ্ঞ, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক। শচীন দেববর্মণের সৃষ্টিগুলি আজও আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে প্রতিবছরই শচীন দেববর্মণের জন্মজয়ন্তী রাজ্যব্যাপী পালন করা হয়ে থাকে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে শচীন দেববর্মণের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পাঞ্জলী প্রদানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সহ অন্যান্য অতিথিগণ। অনুষ্ঠানে শচীন দেববর্মণ স্মৃতি সরকারি সংগীত মহাবিদ্যালয়ের শিল্পীগণ সহ রাজ্যের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীগণ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
Leave feedback about this