2025-09-19
Ramnagar, Agartala,Tripura
রাজ্য

রাজ্যের ৮৬.১৪ শতাংশ পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের রাজ্যে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ৮৪৯টি পরিবার রয়েছে। এরমধ্যে এবছর ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৫৮টি পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ বিধানসভায় বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া আনীত একটি বেসরকারি প্রস্তাবের উপর আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা জানান। বিধায়ক রামপদ জমাতিয়ার আনীত প্রস্তাবটি ছিল ‘এই বিধানসভা প্রস্তাব করছে যে রাজ্যের পাহাড়ি-সমতল সর্বত্র জনবসতি এলাকায় পরিদ্রুত পানীয়জল পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিতকরণে রাজ্য সরকার আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করুক’। আলোচনার পর প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার জল জীবন মিশন প্রকল্প ঘোষণা করে। এরপর থেকেই রাজ্যের পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর জল জীবন মিশন প্রকল্পে সারা রাজ্যের প্রতিটি জনবসতি এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে নিয়মিত এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে পানীয়জল সরবরাহ করার লক্ষ্যে মিশন মুডে কাজ করছে। রাজ্যে ৫৮৭টি ভিলেজ কাউন্সিল এবং ৬০৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জল সরবরাহ করার জন্য এবং কার্যকরী পারিবারিক ট্যাপ সংযোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবছর ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা রাজ্যে পানীয়জল সরবরাহ করার জন্য ৪২ ১৬টি গভীর নলকূপ, ১০১৭৬টি স্বল্প ব্যাসের গভীর নলকূপ, ৪০টি জল পরিশোধনাগার, ১৮৩ ১টি আয়রন রিম্যুভাল প্ল্যান্ট এবং ৫৩১টি উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প কাজ করছে। রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় উৎস যেমন ভূগর্ভস্থ এবং নদী, ছড়া ইত্যাদি ভূপৃষ্ঠস্থ জল ব্যবহার করে গভীর নলকূপ, স্বল্প ব্যাসের গভীর নলকূপ, জল পরিশোধনাগার, উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে ঘরবাড়ি রয়েছে, তেমনি ভূগর্ভস্থ জলের অপ্রতুলতার কারণে পানীয়জলের স্থায়ী উৎস যেমন গভীর নলকূপ, স্বল্প ব্যাসের অগভীর নলকূপ খনন করা সম্ভব হচ্ছে না। ঐ সকল এলাকায় ছড়া, ঝর্ণা অথবা পাহাড় চুয়ানো জলকে কেন্দ্র করে উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। তবে এই প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করতে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে।

আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের কোনও কোনও এলাকায় পানীয়জলে আয়রনের পরিমাণ অনুমোদিত সীমার বাইরে থাকায় গভীর নলকূপ প্রকল্পগুলির সঙ্গে আয়রন রিম্যুভাল প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। এই কাজ করতে গিয়ে প্রকল্প রূপায়ণে কিছু সময় বেশি লেগেছে। জল জীবন মিশন প্রকল্পটি সম্পন্ন করার প্রাথমিক সময়সীমা ২০২৪ হলেও কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত গ্রামীণ পরিবারগুলিকে পানীয়জল সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জল জীবন মিশন ২.০ এর অধীনে সময়সীমা ২০২৮ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সমস্যা অতিক্রম করে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর জলের গুণমান পর্যবেক্ষণ, নজরদারি এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে জল জীবন মিশন প্রকল্প সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিশন মুডে কাজ করছে।

প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, ট্রেডার মাধ্যমে সৌরশক্তি ব্যবহার করে পানীয়জল সরবরাহের প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। এমন ৫০টি প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১২টি প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রস্তাব উত্থাপন করে বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া বলেন, ইতিমধ্যেই ৮৬.১৪ শতাংশ পরিবারের মধ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের আগে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়ার হার ছিল ৩ শতাংশেরও কম। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ১০৮টি ভিলেজ কমিটি এলাকায় ১০০ শতাংশ বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ভূপৃষ্ঠস্থ জল এবং বৃষ্টির জল ব্যবহার করে পানীয়জলের সুযোগ পৌঁছে দিতে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। বেসরকারি প্রস্তাবের উপর আলোচনা করেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী, বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দেববর্মা ও বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়। আলোচনার পর প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service