জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী রাজপরিবারের উত্তরসূরি ও তিপ্রা মথা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য দেববর্মা দিল্লিতে বসবাসরত উত্তর-পূর্ব ভারতের জনগণের প্রতি এক জরুরি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আগামী ৯ সেপ্টেম্বর জন্তর মন্তরে আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার জন্য সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই প্রতিবাদের মূল উদ্দেশ্য হলো ত্রিপুরার জনজাতি জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি—অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং তিপ্রাসা অ্যাকর্ডের বাস্তবায়নের বিলম্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
রবিবার এক ভিডিও বার্তায় প্রদ্যোত জানান, এই প্রতিবাদ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পতাকা ও বক্তৃতামুক্ত হবে। ভারতীয় জাতীয় পতাকার আওতায় শুধুমাত্র ত্রিপুরার জনজাতিদের ন্যায্য অধিকার ও ভবিষ্যৎ রক্ষার দাবি উত্থাপিত হবে। তিনি বলেন, “আমরাও ভারতের নাগরিক। ত্রিপুরার জনজাতিদের অধিকার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে। তিপ্রাসা অ্যাকর্ড স্বাক্ষরিত হলেও বহু বৈঠকের পরও এর বাস্তবায়নে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এই বিলম্বের কারণ কী?”
প্রদ্যোত বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ত্রিপুরার যুবক ডেভিড মুরাসিংয়ের অসাধারণ ত্যাগের কথা। ডেভিড এই দাবির সমর্থনে ত্রিপুরা থেকে দিল্লি পর্যন্ত পায়ে হেঁটে এসেছেন, যা জনজাতি জনগণের এই আন্দোলনের তীব্রতা ও গুরুত্বকে তুলে ধরে।
তিনি আরও বলেন, “এটি কোনো রাজনৈতিক দলের আন্দোলন নয়, এটি তিপ্রাসা জনগণের ঐক্যের লড়াই। অতীতে আমাদের কিছুই ছিল না, তখন আমরা জেলা পরিষদের জন্য লড়েছিলাম। আজ আমাদের সম্পদ আছে, কিন্তু সাহসের অভাব রয়েছে। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য এখনই একসঙ্গে দাঁড়ানোর সময়। আমি লড়াই করতে প্রস্তুত—জেলে যেতে হলেও বা জীবন উৎসর্গ করতে হলেও।”
এই আন্দোলনকে কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, বরং ত্রিপুরার জনজাতিদের অস্তিত্ব ও অধিকার রক্ষার একটি সংগ্রাম হিসেবে উল্লেখ করে প্রদ্যোত উত্তর-পূর্ব ভারতের সকল বাসিন্দার প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এই লড়াই ত্রিপুরার জনজাতিদের ভবিষ্যৎ ও অধিকারের জন্য। আমাদের একতার মাধ্যমে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে আমাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করব।”
এই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নিতে দিল্লিবাসী উত্তর-পূর্ব ভারতীয়দের পাশাপাশি ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদেরও উপস্থিত থাকার জন্য প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য দেববর্মা বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন। তাঁর এই আহ্বান ত্রিপুরার জনজাতিদের দীর্ঘদিনের দাবিকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Leave feedback about this