2025-07-25
Ramnagar, Agartala,Tripura
দেশ রাজনৈতিক

আরএসএসকে ওবিসিদের সবচেয়ে বড় শত্রু বলে বর্নণা করেন রাহুল গান্ধী

জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- রাজধানী দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে কংগ্রেস আয়োজন করেছিল ওবিসি মহা সম্মেলনের। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়ো, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধি, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট সহ অনেক প্রথম সারির নেতা নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় রাহুল বলেন যে এখন তাঁর অগ্রাধিকার হবে ওবিসিদের জন্য লড়াই করা। তিনি তেলেঙ্গানার জাতিগণনাকে একটি রাজনৈতিক ঝড় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেই সঙ্গে আরএসএসকে ওবিসিদের সবচেয়ে বড় শত্রু বলে বর্নণা করেছেন।

লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল স্বীকার করেছেন যে তিনি সময়মতো ওবিসি সম্প্রদায়ের সমস্যাগুলি বুঝতে পারেননি, আর এটাই ছিল তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুলগুলির মধ্যে একটি। তিনি বলেন, ‘যদি আমি ইউপিএ শাসনামলে ওবিসিদের যন্ত্রণা বুঝতে পারতাম, তাহলে আমি সেই সময়েই জাতিগণনা পরিচালনা করতাম।’ তিনি বলেন যে দলিত, আদিবাসী এবং মহিলাদের সমস্যা বুঝতে তাঁর সময় লেগেছে। কিন্তু ওবিসিদের পরিস্থিতি বুঝতে তাঁর আরও বেশি সময় লেগে গিয়েছে।

হতাশ কণ্ঠে এদিন রাহুল বলেন, “আমি MGNREGA, খাদ্য সুরক্ষা আইন, বন অধিকার আইনের মতো বিষয়গুলিতে ভাল কাজ করেছি, কিন্তু ওবিসি-তে আমি ব্যর্থ হয়েছি।” লোকসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে এখন তিনি এই ফ্রন্টে লড়াই করতে আর পিছপা হবেন না। জাতিশুমারি থেকে শুরু করে সংরক্ষণ সম্প্রসারণ পর্যন্ত, তিনি ওবিসি অধিকারের লড়াইকে এক নির্ণায়ক মোড়ে নিয়ে যাবেন।

রাহুল নিজ জেদি মনোভাব সম্পর্কে জনগণকে বোঝাতে সাকশী রেখেছেন বোন রায়বেরিলির সাংসদ প্রিয়ঙ্কাকে। বলেছেন, ‘প্রিয়ঙ্কা গান্ধি ভদ্রাকে জিজ্ঞাসা করুন, রাহুল গান্ধি যদি কিছু সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে কি তিনি পিছিয়ে আসেন?’ ওয়েনাড়ের সাংসদ এদিন কংগ্রেস শাসিত তেলেঙ্গানা সরকারের জাতিশুমারিকে ‘ঝড়’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এর পরিসংখ্যান হতাশাজনক। রাহুলের কথায়, “তেলেঙ্গানার কর্পোরেট অফিসগুলিতে কতজন ওবিসি, দলিত, আদিবাসী রয়েছেন এক মিনিটের মধ্যেই তা চাইলে বের করে আনা যায়। শুধুমাত্র উচ্চবর্ণের লোকেরা কোটি কোটি টাকার প্যাকেজ পাচ্ছে, আর ওবিসি, দলিত এবং আদিবাসীরা শুধু শ্রম দিয়ে যাচ্ছে।’

এরপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধি। বলেন, “নরেন্দ্র মোদি কোনও বড় সমস্যা নন। উনি তো শুধু আত্মপ্রচারে বিশ্বাসী। ওঁর নিজস্ব কোনও ক্ষমতা নেই। উনি আমাদের মাথার উপর চড়ে বসেছেন। আসল সমস্যা হল আরএসএস।” রাহুল সরাসরি ওবিসি সম্প্রদায়কে বলেছেন যে তাঁদের আসল প্রতিপক্ষ হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। তিনি দাবি করেন যে, জাতিশুমারির পর সংরক্ষণের ৫০ শতাংশ সীমা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন যে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি ইতিমধ্যেই এই প্রাচীর ভেঙে ফেলেছেন।

সভায় ভাষণ দিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াও। তিনি বলেছেন, ‘এই ভাগিদারি ন্যায় সম্মেলন শুধু একটি রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, বরং, এটি ভারতের পিছিয়ে পড়া এবং বঞ্চিত বর্ণের সম্মিলিত আহ্বান। ডঃ আম্বেদকর বলেছিলেন – ‘ন্যায়বিচার জাতির আত্মা।’ আজ এই বঞ্চিত মানুষরা সমাজে চলমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তোলার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।”

সিদ্দারামাইয়া আরও বলেন, “আমাদের মেনে নিতে হবে যে ভারতের সামাজিক কাঠামো ন্যায়বিচারের উপর ভিত্তি করে নয়, বরং বর্জনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। যারা এই দেশটি গড়ে তুলেছেন আমাদের সে পিছিয়ে পরা উৎপাদনশীল শ্রেণি, তাদের শিক্ষা লাভ করা উচিত। চিরকাল তাঁদের ভূমি এবং নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। তাদের কঠোর পরিশ্রমকে সম্মান করা হয়নি, বরং তাঁদের সামাজিক শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়েছিল। এটি কোনও কাকতালীয় ঘটনা ছিল না, বরং একটি সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা ছিল। বিজেপি-আরএসএসের আদর্শ এই ব্যবস্থার অবসান চায় না, বরং এটিকে মহিমান্বিত করে।”

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service