জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- বাঙালি হেনস্থা প্রসঙ্গে ফের বাংলা-বাঙালির পক্ষে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অসমে বাঙালি হেনস্থার অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিবাদে আরও একবার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি। যাঁরা মাতৃভাষাকে ভালোবাসেন, তাঁদের পাশে থাকার বার্তাও দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার এ প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘দেশে দ্বিতীয় সর্বাধিক কথ্য ভাষা হল বাংলা। অসমেও তাই।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতার স্পষ্ট অভিযোগ, ভাষার ভিত্তিতে মানুষকে দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে! তিনি লেখেন, ‘যাঁরা সমস্ত ভাষা ও ধর্মকে সম্মান করেন তাঁদের উপর শুধুমাত্র মাতৃভাষার জন্য হেনস্থা করা নিশ্চিতভাবে অসাংবিধানিক এবং বৈষম্যমূলক আচরণ।
অসমে বিজেপির বিভেদমূলক এই এজেন্ডা সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে।’ এরপরই বাংলা ভাষাভাষীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘কিন্তু মানুষও চুপ করে বসে থাকবে না। অসমবাসী রুখে দাঁড়ান। যাঁরা মাতৃভাষার জন্য, নিজের পরিচয় রক্ষার লড়াই করছেন, আমি তাঁদের মতো প্রত্যেক নির্ভীক মানুষের পাশে আছি।’ মমতাকে পালটা দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘ভাষা নিয়ে বিরোধ নেই, লড়াই মুসলিম অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে’।
প্রসঙ্গত, বিজেপি শাসিত রাজ্যে লাগাতার বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে সম্প্রতি কলকাতার রাজপথে মহামিছিলও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই মিছিল থেকে কেন্দ্রকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যেখানে যেখানে বাংলা বলার জন্য মানুষকে আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, আমি সেখানে গিয়ে আরও জোরে বাংলায় কথা বলব।
সাহস থাকলে আমাকেও ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখুন!’ অবিলম্বে এই অত্যাচার বন্ধ না হলে সারা দেশ ঘুরে প্রতিবাদ জানানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি, বাংলাভাষীদের ‘বিদেশি’ বলে তকমা দিয়েছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এর বিরুদ্ধেও ক্ষোভপ্রকাশ করেছিল তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির ভাষানীতির বিরুদ্ধে এই ইস্যুকে আরও জোরালো করে তুলতে চাইছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। আর সেই কৌশলের মোক্ষম অস্ত্রই হতে চলেছে ‘বাংলা’ ভাষা।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাঙালিদের সঙ্গে অসমীয়াদের বিবাদ আজকের নয়। বিগত ছয় ও সাতের দশকে অসমে শুরু হয় ‘বঙ্গাল খেদাও’ অভিযান। বাংলাভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে ১৯৬১ সালে প্রাণ হারিয়েছিলেন শিলচরের ১১ জন বাংলা ভাষাভাষী। এরপর বরাক উপত্যকায় সরকারি ভাষা হিসেবে গৃহীত হয় বাংলা। কিন্তু এখন বরাক উপত্যকায় অসমীয় ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। এনআরসি করে বাঙালিদের বাংলাদেশি প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টাও করেছিল অসম সরকার।
Leave feedback about this