জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-যে কোনও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে চিকিৎসকের পাশাপাশি নার্সিং অফিসারদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নার্সিং অফিসারদের আন্তরিক পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমেই রোগী এবং তার পরিবারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি আস্থা তৈরি হয়। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
এবছর আন্তর্জাতিক নার্স দিবসের থিম হচ্ছে ‘আওয়ার নার্সেস, আওয়ার ফিউচার, কেয়ারিং ফর নার্সেস, স্ট্রেংদেন ইকোনমিস’। স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোনও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে নার্সিং অফিসাররা ফ্রন্ট রানার হিসেবে কাজ করে থাকেন। রোগীদের সুস্থ করে তোলার লক্ষ্যে তারা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি আস্থা অর্জন নার্সিং অফিসারদের পরিষেবার উপর নির্ভর করে। তাই পরিষেবা প্রদানে যাতে কোনও ধরনের ঘাটতি না থাকে সে বিষয়ে তাদের সচেতন থাকতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন নার্সিং ইন্সটিটিউট থেকে পাশ করা ছেলেমেয়েরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে নার্সিং অফিসারদেরও আধুনিক প্রশিক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে রাজ্য থেকেই নার্সিং বিষয়ে পড়াশুনা করতে পারে সে লক্ষ্যে নার্সিং ট্রেনিং ইন্সটিটিউটকে আগরতলা গভর্নমেন্ট নার্সিং কলেজে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি নার্সিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা নার্সিং বিষয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পাচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে গত ২০২৪ সালে ১৫৩ জন নার্সিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও ৩৩২ জন নার্সিং অফিসারের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি নার্সিং অফিসারদের বিভিন্ন অপারেশন থিয়েটার, ইমার্জেন্সি লাইফ সাপোর্ট, ফ্যাসিলিটি বেসড ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব নিউনাটাল অ্যান্ড চাইল্ডহুড ইলনেস ইত্যাদি বিষয়গুলির উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আগামীদিনে রাজ্যে মেডিক্যাল হাব স্থাপনেরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, রাজ্যে বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার মানুষও বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে এবং অধিকর্তা ডা. তপন মজুমদার। অনুষ্ঠানে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ডা. হরপ্রসাদ শর্মা, ত্রিপুরা নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার রেবিকা ডার্লং, ত্রিপুরা নার্সিং কাউন্সিলের সহসভাপতি অরিন্দম দেব প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের নার্সিং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে এমন ১০ জন ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন সফল বাস্তবায়নের জন্য আই.জি.এম. হাসপাতাল, উত্তর ত্রিপুরা জেলা হাসপাতাল, রাজা আয়ুর্বেদিক হাসপাতাল, বিশালগড় মহকুমা হাসপাতাল এবং ধলাই জেলা হাসপাতালকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার প্রাপকদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী শংসাপত্র তুলে দেন।
Leave feedback about this