জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- চৈত্র মাস মানেই বাসন্তী মায়ের আগমন বার্তা।বসন্তে বাঙালি বসন্ত উৎসবের পাশাপাশি মেতে উঠে বাসন্তী পূজায়ও। কুমোরটুলিতে শিল্পিরা ঘেঁটে চলেছে দিবারাত্রি। বসন্তকালের দূর্গা পুজোই এক সময়ে বাঙালি সমাজের আসল দুর্গাপূজা বলে গণ্য করা হত। বিপদকালে সকল অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটানোর উদ্দেশ্যে আদ্যশক্তির আরাধনার প্রথা পুরাকাল থেকেই চলে এসেছে। মহাপুরুষেরা যুগ যুগ ধরে তাই করে এসেছেন। রামায়ণ অনুসারে অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে মহামায়া দুর্গার আরাধনা করেন, যা অসময়ে হয়েছিল বলে অকালবোধন হিসেবে খ্যাত। অন্যদিকে পুরান অনুযায়ী মেধস মুনির দীক্ষিত চন্দ্র বংশীয় রাজা সুরথ বসন্তকালে মহাশক্তি দুর্গার আরাধনা করেন এবং পূজার প্রচলন করেন। দেখতে গেলে এ শুধু কালের পার্থক্য, তবে আরাধনা কিন্তু দেবী দুর্গারই। বাঙালির এই উৎসব বর্তমানকালেও কিন্তু অনেক তাৎপর্য বহন করে রেখেছে। সেটা চৈত্র বাসন্তী পূজার নামেই হোক বা রামের অকালবোধন হোক অথবা আশ্বিনের শারদীয়ার দুর্গাপূজা। একটি বছরে চারটি নবরাত্রি আসে, তার মধ্যে দুটি গুপ্ত নবরাত্রি। তবে শরৎ নবরাত্রি এবং বসন্ত নবরাত্রি উদযাপন প্রায় গোটা দেশ জুড়ে হয়ে থাকে। সূর্য ও চন্দ্রের নির্দিষ্ট অবস্থান মেনে চলার মাধ্যমে নবরাত্রি পালিত হয়। বসন্তের নবরাত্রি পালিত হয় বাসন্তী পূজা হিসেবে। শারদীয় দুর্গাপূজার মত এই বাসন্তী পূজো দেবী দুর্গার আরাধনার জন্য করা হয়। আদি কালে দুর্গার আরাধনায় বাসন্তী পূজা করা হত। একটা সময় বাসন্তী পূজা কিছু জমিদার বাড়ি তথা বনেদি বাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন যেন তা আর নেই। কাল ক্রমে বাসন্তী পূজার জনপ্রিয়তাও এখন অনেকটাই বেড়েছে। বহু ক্লাব ও সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজন করা হয় দেবী বাসন্তীর আরাধনা। সাধারণত চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে অনুষ্ঠিত হয় বাসন্তী পূজা। তাই এবছর তিথি অনুযায়ী আগামী ২৭ মার্চ মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দেবীর আরাধনা। এই পূজোর সমস্ত রীতিনীতি নিয়ম-কানুন সবকিছুই দুর্গাপুজোর মত।তাই একে একে দুর্গাপূজার অনুকরণে মহা সপ্তমী, মহা অষ্টমী, মহা নবমীর শেষে হবে বিজয়া দশমী। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে এবছর বাসন্তী পূজার বিজয়া দশমী ৩১ শে মার্চ। তিথি মেনে পুজোর আয়োজনে উদ্যোক্তাদের মধ্যে চলছে এখন জোরদার প্রস্তুতি।একইভাবে মৃন্ময়ী মাকে চিন্ময়ী করে তুলতে ব্যস্ত কুমোর পাড়ার মৃৎশিল্পীরাও। রাজ্যে এবছর বাসন্তী পূজোর সংখ্যা অন্যান্য বারের তুলনায় খানিকটা বেড়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই দেবীর অকালবোধনকে ঘিরে কুমোর পাড়া থেকে শুরু করে সর্বত্রই যেন এখন উৎসবের আমেজ। গত দুই বছর করোনা কালে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মৃৎ শিল্পীরা। তবে এবারের পুজোয় কিছুটা হলেও পুষিয়ে যাবে শিল্পীদের। মূর্তির দাম না বাড়লেও বেড়ে গেছে আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম।
রাজ্য
বাসন্তী মায়ের আগমনীতে ব্যস্ত শিল্পীরা
- by janatar kalam
- 2023-03-22
- 0 Comments
- Less than a minute
- 2 years ago
Leave feedback about this