2024-09-20
agartala,tripura
রাজ্য

রাজ্যে আঞ্চলিক নারিকেল নার্সারি স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে : কৃষিমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-
উত্তর পূর্ব নারিকেল চাষী সম্মেলন আজ রাজ্যে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়। নারিকেল উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের এই সম্মেলনে রাজ্যের প্রায় ৭ শতাধিক নারিকেল চাষী অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী রতনলাল নাথ। সম্মেলনে রাজ্যে নারিকেলের বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নারিকেল চাষের উপর টেকনিক্যাল সেশনের মাধ্যমে উপস্থিত কৃষকদের অবহিত করা হয়। উত্তর পূর্ব নারিকেল চাষী সম্মেলনের উদ্বোধন করে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, নবগঠিত সরকার উন্নত ত্রিপুরা ও শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তুলতে কাজ করবে। তিনি বলেন, বিশ্বে নারিকেল উৎপাদনে ইন্দোনেশিয়ার পর ভারত দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। নারিকেল ও নারিকেল গাছের সমস্ত কিছুই দৈনন্দিন জীবনযাপনের বিভিন্ন প্রয়োজনে লাগে। তাই নারিকেল গাছকে কল্পবৃক্ষ বলা হয়। তিনি আরও জানান, একটি সার্ভে অনুযায়ী ১ হেক্টর নারিকেল বাগান তৈরিতে প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু এর থেকে আয় হয় প্রায় ৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। দক্ষিণ ত্রিপুরার হিচাছড়ায় ২২ হেক্টর জমিতে নারিকেল উন্নয়ন পর্ষদের নার্সারি থেকে চলতি বছর হতে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার নারিকেলের চারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তাছাড়াও ত্রিপুরা উদ্যানপালন ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের উদ্যোগে একটি আঞ্চলিক নারিকেল নার্সারি স্থাপন করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্মেলনে কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, গত পাঁচ বছরে বহির্রাজ্য এবং বিদেশে ১,৭৯৯ মেট্রিকটন বেল, ২৩৫ মেট্রিকটন তেঁতুল, ১৯ মেট্রিকটন পান, ৬০২ মেট্রিকটন আদা, ১০,০৮৭ মেট্রিকটন আনারস, ৪.৪০ মেট্রিকটন কাঁঠাল রপ্তানি করা হয়েছে। ফলে রাজ্যের আয় হয়েছে ১৮ কোটি টাকা। রাজ্যের কৃষি দপ্তরের গত পাঁচ বছরের সাফল্যের খতিয়ান দিতে গিয়ে শ্রীনাথ বলেন, গত পাঁচ বছরে কৃষকদের সার ও বীজের জন্য ভর্তুকি দেওয়ার জন্য ৪১ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়, কৃষক সম্মাননিধি যোজনায় রাজ্যে ২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৯৯৩ জন কৃষককে প্রতি বছর ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এতে এখন পর্যন্ত ৫৫৩ কোটি টাকা কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। এই যোজনায় রাজ্য সরকার কৃষকদের ৬ হাজার টাকার পরিবর্তে ৮ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়েছে। এতে রাজ্য সরকারের প্রত্যেক বছর ৪৯ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার প্রিমিয়াম দেওয়ার জন্য গত তিন বছরে রাজ্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ২০ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে কৃষকরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ৬ কোটি ৯ লক্ষ টাকা। বর্তমান সরকার আগামী দিনগুলিতে রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধান সহায়ক মূল্যে ক্রয় করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। গত পাঁচ বছরে রাজ্যের কৃষকদের ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে ঋণ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ৩২টি কৃষক বন্ধু কেন্দ্ৰ গড়ে তোলা হয়েছে। ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৫৪৬টি সয়েল হেলথ কার্ড, ২৮ হাজার ৮০০ জন কৃষককে ১৬৫ কোটি টাকা মূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে। বর্গাদার কৃষকদের বাৎসরিক ৩ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে বর্তমান সরকার। এরফলে রাজ্য সরকারের ব্যয় হবে ৩৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় বলেন, বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে নারিকেল চাষ করা হচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও ৫০০ হেক্টর জমি নারিকেল চাষের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তিনি বলেন, রাবারের তুলনায় নারিকেল চাষ করে তিনগুণ অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিধায়ক মাইলেফ্লু মগ, নারিকেল উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য নারিকেল উন্নয়ন আধিকারিক ড. হনুমন্তে গোড়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গুয়াহাটিস্থিত নারিকেল উন্নয়ন পর্ষদের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধিকর্তা ড. রজত পাল। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, উদ্যানপালন ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা ড. ফণীভূষণ জমাতিয়া, কৃষি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. টি কে মাইতি, হর্টিকালচার কর্পোরেশনের উপদেষ্টা ড. এ কে নন্দী প্রমুখ।

Leave feedback about this

  • Quality
  • Price
  • Service