জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :- রাজ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনও ধরনের আপোষ করা হচ্ছে না। এসবক্ষেত্রে যাতে যোগ্য মানবসম্পদের অভাব না হয় তারজন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডাই-ইন-হারনেস সহ রাজ্যে আজ পর্যন্ত ২০ হাজার ১৮১ জনকে বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষা দপ্তরেই ৬ হাজার ৯৯৮ জনকে পি.জি.টি, জি.টি. এবং ইউ.জি.টি. হিসেবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ছাত্রছাত্রীরা যাতে গুণগতমান সম্পন্ন শিক্ষা পায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্রছাত্রী বান্ধব শিক্ষার পরিবেশ গড়ে উঠে। আজ মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার এবং স্পেশাল এডুকেটরদের মধ্যে নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা। উল্লেখ্য, বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ১০২ জনকে ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচার এবং ৫৫ জন স্পেশাল এডুকেটরদের নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। প্রতীকী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী কয়েকজনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা বলেন, বর্তমান সরকার প্রথম থেকেই স্বচ্ছতার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া জারি রেখেছে। এখন কেউ বলতে পারবে না রাজনৈতিক পরিচিতি ছাড়া চাকরি হয় না। যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই চাকরি পাওয়া সম্ভব। আজ যারা নিয়োগপত্র পেয়েছে তাদের শারীরিক হাবভাবই বলে দেয় যে তারা এই চাকরির যোগ্য প্রার্থী। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আজকের এই দিনটি চাকরি প্রাপক নিজের এবং তার পরিবারের সকলের জন্য একটি আনন্দের দিন। যা সারা জীবন মনে থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ প্রাপকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে সব সময় নিজেদেরকে আপডেট রাখতে হবে। ক্লাসে ঢোকার পূর্বে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। আর নিজের মধ্যে এই বোধ জাগ্রত করতে হবে যে ক্লাসগুলি মন্দির। তবেই অনন্য উদাহরণ সৃষ্টিকারী শিক্ষক শিক্ষিকা হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী নিজের সাথে তার শিক্ষাগুরুদের আজও যোগাযোগ রাখার কথা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলদের উৎসাহিত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনেই দেশে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করা হয়েছে। যার প্রধান উদ্দেশ্য ভারতীয় সংস্কৃতিকে ভিত্তি করে দেশের ঐতিহ্যময় শিক্ষা ব্যবস্থার নবজাগরণ। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫ হাজার জনের বেশি কন্ট্রাকচ্যুয়াল ও আউটসোর্সিং চাকরি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে নিপুণ ত্রিপুরা, সিএম, সাথ, মিশন মুকুল, সহর্ষ, ১২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি ও ৮৪টি বিদ্যালয়কে পি.এম-শ্রী স্কুলে রূপান্তরিত এবং সিএম, কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা চালু করা হয়েছে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য রাজ্যে ৩টি এম.বি.বি.এস, নার্সিং কলেজ, এএন.এম. ও জি.এন.এম কলেজ, এগ্রিকালচার, ফিসারি, ভেটেরিনারি কলেজ রয়েছে। তাছাড়া ট্রিপল আইটি, ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, এনআইটি, সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে রাজ্যে রয়েছে। সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে অংশগ্রহণের জন্য লক্ষ্য প্রকল্পে ইতিমধ্যে ১০ জনকে সহায়তা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সম্প্রতি নতুন দিল্লিতে উত্তর পূর্বাঞ্চল বিজনেস সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে এই অঞ্চলের ৮টি রাজ্যের সাথে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার মউ স্বাক্ষর হয়েছে। তারমধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের সাথেই প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার মউ স্বাক্ষরিত হয়। রাজ্যে আইনের শাসন রয়েছে বলেই তা সম্ভব হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় রাজ্য সরকারের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, বর্তমান সময়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলগত ভাবনা তৈরির উপর বিশেষ জোর দেওয়া উচিত। রাজ্যের ১২০০টি বিদ্যালয়ে প্রায় ৩,৫০০ জনের মতো দিব্যাঙ্গজন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তাদের কল্যাণেও রাজ্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন.সি শর্মা বলেন, ফিজিক্যাল এডুকেশন টিচারদের রাজ্যের বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়গুলিতে পোস্টিং দেওয়া হবে, যেখানে শারীর শিক্ষাকে একটি বিষয় হিসেবে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হবে। স্পেশাল এডুকেটররা দিব্যাঙ্গ ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বুনিয়াদি শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা রাজীব দত্ত এবং এস.সি.ই.আর.টি.-এর অধিকর্তা এল, ডার্লং। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকগণ সহ নিয়োগপত্র প্রাপকদের অভিভাবকগণও উপস্থিত ছিলেন।





Leave feedback about this