জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-ত্রিপুরার জনজাতি প্রভাবশালী সংগঠন তিপরা মথা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর সময়সীমা বাড়ানোর তীব্র বিরোধিতা করে সরব হয়েছে। শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিপরা মথার বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা জোর দিয়ে বলেন, “সিএএ-র মতো আইনের পক্ষে তিপরা মথা কখনোই দাঁড়াবে না।” পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচন নিয়ে তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের জন্য তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো তথা এমডিসি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
“ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচনে আমরা জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত,” বলেন রঞ্জিত। তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালে ভিলেজ কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে নির্বাচন না হওয়ায় ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায় প্রশাসনিকভাবে অবহেলিত। “এতে গ্রামবাসীদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। জোটে থেকেও যদি জনগণের কাজ না হয়, তবে তা অর্থহীন,” তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ত্রিপুরায় সর্বশেষ ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, এবং ফলাফল ঘোষিত হয়েছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি। পাঁচ বছর পরপর নির্বাচনের প্রথা থাকলেও, ২০২১ সালে কোভিড মহামারী এবং অন্যান্য কারণে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরও রাজ্য সরকার এ বিষয়ে উদাসীন থাকায় ত্রিপুরা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়।
রঞ্জিত দেববর্মা জানান, প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ এই বিলম্বের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে নির্বাচন বিলম্বের কারণ জানতে চেয়ে নোটিশ জারি করেছে। এই উদ্যোগের জন্য তিপরা মথার নেতৃত্ব প্রদ্যোতের প্রতি কৃতজ্ঞ। “আমরা আশাবাদী, শীঘ্রই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে,” বলেন রঞ্জিত। তবে, বিজেপির সঙ্গে জোটে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে তিপরা মথা নির্বাচনে লড়তে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”
তিপরা মথার এই দৃঢ় অবস্থান ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলে নতুন গতিশীলতা আনতে পারে। জনজাতি সম্প্রদায়ের অধিকার ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার জন্য তাদের এই লড়াই রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
Leave feedback about this