জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুবিধা অন্তিম জনপদের মানুষের কাছে পৌছে দিতে হবে। এজন্য সরকারি আধিকারিকদের আরও বেশি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। আজ উত্তর ত্রিপুরা জেলায় মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের জেলাভিত্তিক পর্যালোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন।
উত্তর ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত পর্যালোচনা সভায় তিনি বলেন, দপ্তরের কর্মপরিকল্পনা কতটা রূপায়িত হয়েছে, কতটা বাকি রয়েছে তা দপ্তরের আধিকারিকদের প্রতিমাসে পর্যালোচনা করতে হবে। কর্মপরিকল্পনা তৈরী করার ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণ করতে হবে। কোন এলাকায় কি কি উন্নয়নমূলক কাজ অগ্রাধিকার দিয়ে করতে হবে সেগুলি যেন কর্মপরিকল্পনায় প্রাধান্য পায়।
পর্যালোচনা সভায় মৎস্যমন্ত্রী বলেন, যাতে মাছের পোনা ও মাছের খাদ্য বর্ষাকালের শুরুতেই বিতরণ করা যায় সেই দিকে আধিকারিকদের নজর দিতে হবে। মাছের উৎপাদন বাড়ানোর উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রাণীজ খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতেও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পর্যালোচনা সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী ভেটেরিনারি ডিসপেনসারিগুলিতে যাতে সরকারি ঔষধ সরবরাহ ঠিক থাকে, যাতে প্রাণীপালকরা বিনামূল্যে ঔষধ পেতে পারে, সেদিক লক্ষ্য রাখার জন্য দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
কৃত্রিম গো-প্রজননের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা যাতে পূরণ করা যায় সেজন্য আধিকারিকদের গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলেন। পর্যালোচনা সভায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক যাদবলাল দেবনাথ, ধর্মনগরপুর পরিষদের চেয়ারপার্সন মিতালী রাণী দাস সেন, মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস, প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা ড. নীরজ কুমার চঞ্চল, তপশিলি জাতি কল্যাণদপ্তরের অধিকর্তা জয়ন্ত দে, উত্তর ত্রিপুরা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক বিপ্লব দাস, অতিরিক্ত জেলাশাসক এল দার্লং, ধর্মনগরের মহকুমা শাসক সজল দেবনাথ, পানিসাগরের মহকুমা শাসক সুশান্ত দেববর্মা, কাঞ্চনপুরের মহকুমা শাসক ড. দীপক কুমার, জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতি ও বিএসি’র চেয়ারম্যান, মৎস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের জেলাস্তরের আধিকারিকগণ।
পর্যালোচনা সভায় মৎস্য দপ্তরের উপঅধিকর্তা বিজয় রায় জানান, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় মাছের উৎপাদন এবছর বৃদ্ধি পেয়েছে। আগস্ট মাসের মধ্যেই মৎস্যচাষিদের মধ্যে পোনা বিতরণ সম্পন্ন করা হয়। চলতি বছরে ১১৩টি জলাশয় সংস্কার করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টির কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।পর্যালোচনা সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের উপঅধিকর্তা জানান, চলতি বছরে টিকাকরণ শিবির করে জেলায় ৭ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩৩০টি পশু-পাখীকে টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়।
এর মধ্যে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৯১টি পশু ও পাখীকে টিকাকরণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৬ জন প্রাণীপালককে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের পর্যালোচনায় ছাত্রছাত্রীদের প্রি-মেট্রিক ও পোস্ট মেট্রিক স্কলারশিপ প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করা হয়। তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে পরিচালিত ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসগুলিতে যাতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে তা নিয়মিত পরিদর্শন করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয়।
Leave feedback about this