2025-08-12
Ramnagar, Agartala,Tripura
রাজ্য শিক্ষা স্বাস্থ্য

সমাজের সব অংশের মানুষকে নেশা ও এইডস প্রতিরোধে সচেতন করতে এগিয়ে আসতে হবে: মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি:- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেমন নেশামুক্ত ভারতবর্ষ গঠন করতে চান ঠিক তেমনি রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত করতে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলছে। কিন্তু একা সরকার বা কোনও দপ্তরের পক্ষে নেশামুক্ত ও এইডস মুক্ত ত্রিপুরা গড়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সমাজের সব অংশের মানুষকে নেশা ও এইডস প্রতিরোধে সচেতন করতে এগিয়ে আসতে হবে। আজ প্রজ্ঞাভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বেল বাজিয়ে রাজ্যের ১ হাজার ১৮৭টি বিদ্যালয়ের ৬ হাজার ক্লাস রুমে একযোগে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ২ লক্ষ ৩১ হাজার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এইডস সচেতনতামূলক আলোচনাচক্র ‘বেল অব অ্যাওয়ারনেস’-এর সূচনা করে একথা বলেন।

অনুষ্ঠানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সচেতনভাবে যত বেশি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে ততো দ্রুত ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত ও এইডস মুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা যাবে। ড্রাগসের নেশা ও এইচ.আই.ভি. আক্রান্তের ক্ষেত্রে রুট অব এন্ট্রি সম্বন্ধে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। ইঞ্জেকটেবল ড্রাগস সেবনের সাথে এইচ.আই.ভি. সংক্রমণের সম্পর্ক রয়েছে। ড্রাগস সেবনকারী সম্পর্কে ছাত্রছাত্রী সহ অভিভাবকদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে অভ্যাস থেকে আসক্তি আসে। সরকার চেষ্টা করছে ত্রিপুরাকে এইডস ও নেশা মুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে। রাজ্য সরকার জনপ্রতিনিধিস্তরে ফোরাম গড়ে নেশা ও এইডসের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নজরদারি থাকলে তা প্রতিরোধে অনেকটাই সহায়ক হবে।

প্রজ্ঞাভবনে ত্রিপুরা রাজ্য এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির উদ্যোগে এবং শিক্ষা দপ্তরের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক যুব দিবসের অঙ্গ হিসেবে ‘বেল অব অ্যাওয়ারনেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা আরও বলেন, বর্তমানে রাজ্যে ৩,৪৩৩ জন এইডস আক্রান্তকে সরকারিভাবে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এইডস আক্রান্তরা যেন হিনমন্যতায় না ভুগে সেদিকেও নজর রাখতে হবে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়তা করতে হবে। সরকারিভাবে রাজ্যে এইডস রোগীদের জন্য সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা রয়েছে। এইচ.আই.ভি. সংক্রমণ ও ড্রাগসের নেশা থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে সর্বস্তরের জনসাধারণকে সজাগ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, রাজ্যে এইডস সচেতনতা বাড়াতে মহাবিদ্যালয়গুলির পাশাপাশি বিদ্যালয়স্তরেও ১০০টি রেড রিবন ক্লাব গঠন করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে ১০০টি স্থানে পথ নাটক করা হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মোবাইল টেস্টিং ভ্যান চালু করা হয়েছে।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার বলেন, রাজ্যে এইচ.আই.ভি. পজিটিভ আক্রান্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয় স্তর থেকে এই বিষয়ে সচেতন করার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে এক সময়ে ড্রাগস নেওয়া যুবক ম্যাগ্রামালিয়াম হালাম ড্রাগসের নেশামুক্ত হয়ে বি.এড, পাশ করে বর্তমানে মাস্টার ডিগ্রি করছে। মুখ্যমন্ত্রী ম্যাগ্রামালিয়াম হালামকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে এইচ.আই.ভি. আক্রান্তদের দ্বারা আঁকা ছবি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মধ্যশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. তপন মজুমদার, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক মেডিসিন দপ্তরের অধিকর্তা ডা. নির্মল সরকার, ন্যাশনাল হেলথ মিশন ডিরেক্টর সাজু বাহিদ এ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রকল্প অধিকর্তা ডা. বিনিতা চাকমা। ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রকল্প সহ-অধিকর্তা ডা. শঙ্খশুভ্র দেবনাথ। সচেতনতামূলক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের এইডস সচেতনতা বিষয়ে শিক্ষামূলক আলোচনা করেন আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও জি.বি. হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সুপার প্রফেসর (ডা.) কনক চৌধুরী।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service