2025-11-05
Ramnagar, Agartala,Tripura
ধর্ম রাজ্য

রাস পূর্ণিমার পুণ্য আলোয় জ্বলে উঠল ব্রহ্মকুন্ড মেলা: ত্রিপুরার মিলন-সম্প্রীতির উজ্জ্বল প্রতীক

জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :- রাস পূর্ণিমার পবিত্র তিথিতে আজ থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ব্রহ্মকুন্ড মেলা ও প্রদর্শনী। মোহনপুর মহকুমার ব্রহ্মকুন্ড প্রাঙ্গণে এই রঙিন উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ। মেলার উদ্বোধনী মঞ্চে উপস্থিত জনসমুদ্রের মাঝে মন্ত্রীর হাতে ফিতে কাটার সঙ্গে সঙ্গে যেন জেগে উঠল ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অপরূপ ছবি!

উদ্বোধনী ভাষণে মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, “ব্রহ্মকুন্ড মেলা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি ত্রিপুরার মিলন, সম্প্রীতি ও মানবতার জ্বলন্ত প্রতীক।” বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-সংস্কৃতির মানুষের এই একত্রিত হওয়া সমাজে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের অমূল্য বার্তা ছড়িয়ে দেয়। তিনি উচ্ছ্বাসে যোগ করেন, “মেলা মানে আনন্দের ঝর্ণাধারা, মিলনের উৎসব। এই ঐশ্বরিক রাস পূর্ণিমায় আমরা সকলের সমৃদ্ধি ও সুখের কামনা করি।”

মন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন, ব্রহ্মকুন্ড এলাকার সার্বিক উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছে ১৩ কোটি ৯৬ লক্ষ ৮০ হাজার ৮২৫ টাকা! শিগগিরই শুরু হবে আধুনিকীকরণের কাজ—যাতে পর্যটকরা আরও মনোরম অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে পারেন। এই উদ্যোগ ত্রিপুরার পর্যটনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিটিএএডিসি’র কার্যনির্বাহী সদস্য (শিক্ষা) রবীন্দ্র দেববর্মা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:

পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল,

হেজামারা বিএসি’র চেয়ারম্যান সুনীল দেববর্মা,

পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সদস্য জয়লাল দাস,

ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ,

ব্রহ্মকুন্ড গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান কৃষ্ণা ওরাং,

বিশিষ্ট সমাজসেবী নির্মল দেববর্মা ও ইন্দ্রজিৎ দেববর্মা।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক অসিত কুমার দাস এবং মোহনপুর ব্লকের বিডিও গোপাল কৃষ্ণ দত্ত। স্বাগত বক্তব্যে মোহনপুর মহকুমা শাসক সজল দেবনাথ সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর, মোহনপুর মহকুমা প্রশাসন এবং ব্রহ্মকুন্ড মেলা কমিটির যৌথ প্রয়াসে এই মেলা সাজানো হয়েছে। দপ্তরের শিল্পীরা মন্ত্রমুগ্ধ সংগীত পরিবেশন করে মাতিয়ে তুলেছেন অনুষ্ঠান। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রদর্শনী স্টলগুলো উন্নয়নের গল্প বলছে। উদ্বোধনের পর মন্ত্রী স্টল পরিদর্শন করেন এবং উপস্থিতদের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ মতবিনিময় করেন।

তিন দিন ধরে চলবে এই মেলা—ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক জমকালো পরিবেশনা এবং উন্নয়নমূলক প্রদর্শনী একসঙ্গে ছড়িয়ে দেবে ত্রিপুরার ঐক্য, সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধের আলো। ব্রহ্মকুন্ড মেলা শুধু উৎসব নয়, এটি ত্রিপুরার হৃদয়ের ধড়কন!

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service