জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-
প্রাণীজ খাদ্য উৎপাদনে রাজ্যকে স্বনির্ভর করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করতে রাজ্যে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। কাজ করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মানসিকতা রাখতে হবে। প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা রাখতে হবে। আজ ধর্মনগরের উত্তর ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক মংস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের পর্যালোচনা সভায় একথা বলেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সুধাংশু দাস। উত্তর ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী সুধাংশু দাসের সভাপতিত্বে এই পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মংস্য, প্রাণীসম্পদ বিকাশ ও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের উত্তর ত্রিপুরা জেলায় রূপায়িত কর্মসূচি ও দপ্তরগুলির আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
পর্যালোচনা সভায় মৎস্যমন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সভায় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী উত্তর ত্রিপুরা জেলায় মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ক্ষেত্র পর্যায়ে পরিদর্শন করে চাষিদের সাথে আধিকারিকদের নিয়মিত যোগাযোগ বাড়াতে হবে। চাষিদের উৎসাহিত করতে হবে। মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য জলাশয়গুলিকে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিতে হবে। গবাদি প্রাণীর রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত টিকাকরণে গুরুত্ব দিতে হবে।
পর্যালোচনা সভায় মৎস্য দপ্তরের উপঅধিকর্তা বিজয় রায় গত অর্থবছরে জেলায় দপ্তরের বিভিন্ন সফলতাগুলি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় ৭৭১৩ জন মাছ চাষিকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এটি স্বসহায়ক দল ও সমবায় সমিতিকেও মাছ চাষে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পিগ কাম ফিস ফার্মিং-এ জেলায় ৪১ জনকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উপঅধিকর্তা চলতি অর্থবছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়েও সভায় আলোকপাত করেন। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার পাবদা,
১ হাজার মাগুর মাছের চারা পোনা মাছ চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
পর্যালোচনা সভায় প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের উপঅধিকর্তা জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছাগল পালনে ২৫ জন, শুকর পালনে জনকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় ৮৬৩ জন সুবিধাভোগীকে শুকর পালনে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও তিনি জানান, গত অর্থবছরে জেলায় ৯,৫২৫টি গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন করা হয়েছে। সভায় তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের জেলা কল্যাণ আধিকারিক জানান, গত অর্থবছরে জেলায় ৭২১ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রি-মেট্রিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৬৫৩ জন ছাত্রছাত্রীকে ড বি আর আম্বেদকর মেরিট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। এদিনের পর্যালোচনা বৈঠকে উত্তর ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি ভবতোষ দাস, জেলাশাসক ও সমাহর্তা নাগেশ কুমার বি, ধর্মনগর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন প্রদ্যোৎ দে সরকার, উত্তর ত্রিপুরা জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান, বিএসি’র চেয়ারম্যানগণ, মৎস্য দপ্তরের অধিকর্তা মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. বি কে দাস, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের উপঅধিকর্তা প্রদীপ রিয়াৎ, ধর্মনগর মহকুমার মহকুমা শাসক বিবেক এইচ বি, কাঞ্চনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক রাহুল মোদি, পানিসাগর মহকুমার মহকুমা শাসক সুভাষ আচার্য, জেলার আটটি ব্লকের বিডিওগণ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
Leave feedback about this