জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধিঃ- শুক্রবার আমরা বাঙালী সদর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এদিনের বৈঠকে আমরা বাঙালী সংগঠনের সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল বলেন দেশের সংবিধান অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিক মাত্রই নিজের মত প্রকাশ ও বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে কথা বলা ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজেদের দাবী দাওয়া আদায়ের জন্যে আন্দোলন সংঘটিত করতে পারে । কিন্তু গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড নামক একটি অযৌক্তিক দাবীকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে দিল্লীর যন্তর মন্তরে তিপ্রা মথা দলের সুপ্রিমো প্রদ্যুৎকিশোর দেববর্মন এরাজ্যের উপজাতিদের সমস্ত সমস্যার জন্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালীদের – কে যে দায়ী করেছেন তা কোন ভাবেই মানা যায়না । তিনি বলেছেন , ত্রিপুরার প্রশাসনিক ক্ষমতা , মিডিয়ার ক্ষমতা এবং বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে তিপ্রাপ্ত অর্থাৎ উপজাতিদের নাকি কোন অস্তিত্ব নেই । অথচ আমরা দেখতে পাই- শিক্ষা বিভাগ , পুলিশ বিভাগ , এস.ডি.ও. ডি.এম. বি.ডি.এ থেকে শুরু করে বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বিভাগেই উপজাতি অফিসারগণই শীর্ষস্থান অধিকার করে রয়েছে যা ত্রিপুরার ভারতভুক্তির সময় ছিলই না । কারণ তখন উপজাতিদের মধ্যে শিক্ষার হার ছিল খুবই নগন্য । বর্তমানে শুধু শিক্ষাদীক্ষাই নয় , ব্যবসা – বাণিজ্য , কৃষিকাজ রাজনীতি সব সর্বক্ষেত্রেই দে উপজাতিদের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে তা যে বাঙালীদের দ্বারা বাঙালীদের মাধ্যমেই হয়েছে সেটুকু যারা স্বীকার করতে চায় না তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই উপজাতিদের উন্নয়ণে বাঙালীদের অবদানকে অস্বীকার করতে চায় । অকৃতজ্ঞ , বেইমান । উপজাতিদের মধ্যে যারা এখনো পাহাড়ে কন্দরে বাস করছেন তারা শিক্ষা সংস্কৃতি জীবন প্রণালী সমস্ত দিক থেকেই শহরের উপজাতিদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে । কারণ তারা শহরের উপজাতিদের মতো বাঙালীদের সংস্পর্শ , সহযোগিতা পায়নি । এই ঘটনাই প্রমান করে যে , ত্রিপুরাতে উপজাতিদের উন্নয়ণের মুলে বাঙালীরা । আসলে উপজাতি সভ্যতা অনেক নবীন । বাঙালীদের দ্বারাই তাদের উন্নয়নের রথের চাকা এখন ঘুরতে শুরু করেছে । অন্যদিকে ত্রিপুরা বরাবর ট্রাইবেল রাজ্য , বাঙালীরা সবাই বিদেশী কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ । প্রনোদিত প্রচার । যারা মূলতঃ রাজমালার মতো বইকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরার ইতিহাস ফেরী করছেন তারা হয়ত না জেনে অথবা জেনেশুনেই রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ের লক্ষ্যে বিকৃত ইতিহাস প্রচার করছেন । ভারত বিখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার , ড . নলিনীরঞ্জন রায়চৌধুরী থেকে শুরু করে ত্রিপুরার প্রখ্যাত মুদ্রাগবেষক ও ঐতিহাসিক জহর আচার্যীর রচনা থেকে জানা যায় যে , ত্রিপুরা বরাবরই ছিল বাংলার অঞ্চল । মেঘনার পূর্বপাড় অর্থাৎ চাকলা রোশনাবাদ নিয়ে ছিল আদি ত্রিপুরা , আর বাঙা হচ্ছে মূল অধিবাসী । বাঙালীদের দৈহিক – মানসিক – বৌদ্ধিক শ্রম ও অর্থেই ত্রিপুরা গড়ে উঠেছে । মঙ্গোলীয় রক্তের উপজাতিরা সবাই বহিরাগত মাত্র সাড়ে পাঁচশ বছর আগে বাঁচার তাগিদে পাশের রাষ্ট্র থেকে তারা ত্রিপুরায় প্রবেশ করে । বাঙালী সভ্যতা প্রায় ৫০০০ বছরের পুরনো । ৩১ সালের সেন্সাস থেকে জানা যায় , সাবেক সমতল ত্রিপুরাতে বাঙালীরা ছিল ৯৭ শতাংশ , আর পার্বত্য ত্রিপুরায় প্রায় ৫২ শতাংশ । সুতরাং বাঙালীদের জন্যে উপজাতিরা সংখ্যালঘু হয়েছে কথাটি অবান্তর । তাছাড়া ত্রিপুরা কেন্দ্রনির্ভর ঘাটতি ছোট রাজ্য রাজ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গা নিয়ে এডিসি , ৬ ষ্ঠ তপশীল করে ভূমির অধিকার , ব্যবসা বাণিজ্যের অধিকার থেকে বাঙালীদের বঞ্চিত করা হয়েছে । এঅবস্থায় গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ড হলে রাজ্যের বাঞ্জলীদের বাঁচার শেষ অবলম্বনটুকুও আর থাকবেনা । সুতরাং গ্লেটার তিপ্রাল্যান্ড করে ত্রিপুরা ভাগের মাধ্যমে বঙালীর যেমন চরম সর্বনাশ হবে পরিনামে লাভ হবেনা উপজাতিদেরও । সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় । হলো সবকিছু জেনেবোঝেও শুধুমাত্র উপজাতি ভোটব্যাংক ধরে রাখার স্বার্থে সিপিএম , কংগ্রেস , বিজেপি তৃণমূল এনিয়ে কোন প্রতিবাদ করছেনা । এই পরিস্থিতিতে – আমরা বাঙালী ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি উপজাতি উন্নয়ণের বিরোধী না হলেও গ্রেটার ডিপাল্যান্ডের তীব্র বিরোধী । আমরা রাজা ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি , ত্রিপুরাবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে কোনভাবেই যাতে মেটার তিপ্রাল্যান্ড করা না হয় । এই সমস্যা সমাধানে এখন শুধু দরকার রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন আজকের দিনে অসম রাজ্য সরকারের কাছেও আমাদের দাবী সম্প্রতি মিথ্যা অজুহাতে গ্রেপ্তার করা কাহাড়্যো প্রদীপ দত্তরায়কে অবিলম্বে বিনাশর্তে মুক্তি দিতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
রাজ্য
আমরা বাঙালী সংগঠনের তিপ্রামথারা গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড দাবীর বিরোধিতা
- by janatar kalam
- 2021-12-03
- 0 Comments
- Less than a minute
- 3 years ago
Leave feedback about this