জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-রাস্তাঘাট সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নয়ন, সংস্কার ইত্যাদির মাধ্যমে রাজ্যে এখন উন্নয়নের জোয়ার বইছে। শুধুমাত্র চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৭৭২ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আজ বিশালগড় মহকুমার অন্তর্গত কসবেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থানুকুল্যে কমলাসাগর পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা কসবা ভিউ টুরিস্ট লজের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। 
অনুষ্ঠানে এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী চতুর্দশ দেবতা মন্দির এলাকার পর্যটন পরিকাঠামোর উন্নয়নে ভার্চুয়ালি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুপ্রেরণায় এবং তাঁর নির্দেশিত পথে ত্রিপুরা সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। নেওয়া হচ্ছে একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্প। তিনি বলেন, বনদোয়ারে ৫১ পীঠের আদলে যে ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে সেটি সর্বসাধারণের জন্য খোলে দেওয়া হলে ত্রিপুরা এক অন্যমাত্রায় পরিচিতি পাবে। বহু দূর থেকেও পূর্ণার্থীরা এখানে ছুটে আসবেন। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে ত্রিপুরার আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার।
তিনি বলেন, রাজ্যের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নে এবং অর্থনৈতিক ভিত্তিকে সুদৃঢ় করতে পর্যটনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই রাজ্যের বর্তমান সরকার পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তৃষ্ণা অভয়ারণ্য, খুমুলুঙ ইকোপার্ক, বক্সনগরের বহু পুরনো বৌদ্ধ স্তূপ, ছবিমুড়ার কার্টিং পাহাড়, বৌদ্ধ এবং হিন্দু ভাষ্কর্য সমৃদ্ধ পিলাক পর্যটন ক্ষেত্র, ভুবনেশ্বরী মন্দির সহ রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নে রাজ্য সরকার বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এই সমস্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দেশ বিদেশের পর্যটকরা আরও বেশি সংখ্যায় রাজ্যে আসবেন। তাদের পদার্পণের ফলে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, প্রসাদ স্কিমে ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫১ পীঠের রেপ্লিকায় উদয়পুরের বনদোয়ারে যে ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে উঠছে তা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া রাজন্য স্মৃতি বিজরিত কসবেশ্বরী কমলাসাগর কালীবাড়িকেও এই প্রকল্পে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।
ধর্মীয় পর্যটনের পাশাপাশি ইকোট্যুরিজম, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের ক্ষেত্রেও রাজাকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত হলে আগামী দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে ত্রিপুরা পর্যটনের মানচিত্রে এক নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করবে। এতে যুবকদের কর্মসংস্থান যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ কে চাকমা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিধায়ক অন্তরা সরকার দেব। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, পুলিশ সুপার বিজয় দেববর্মা, পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রশান্ত বাদল নেগি প্রমুখ।
মুখ্যমন্ত্রী আজ যে প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন সেটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১৮.৭৮ কোটি টাকা। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় নেওয়া এই প্রকল্পের মধ্যে দর্শনার্থীদের জন্য অত্যাধুনিক বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকবে।
Leave feedback about this