জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- পিতা-মাতার কোন ক্লান্তি নেই। সন্তান মানুষ করতে জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়েছেন অবলীলায়। কিন্তু একটা সময় আসে যখন তাদের অনেকেই একাকিত্বের মতো কষ্টকর জীবন কাটাতে হয়। ভুগতে হয় অর্থ-কষ্টেও। এ ধারা অনেকদিন ধরেই চলছে। তবে সম্প্রতি বিষয়টি আশঙ্কা জনক হারে বেড়ে চলেছে। এক্ষেত্রে অসহায় মানুষগুলোর ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে বৃদ্ধাশ্রম গুলি। দেশে বিদেশে সর্বত্র আজ ভার্ধক্যে উপনীত মানুষ চরম অসহায়। মা-বাবা সন্তানকে মানুষ করেন, সঞ্চয় বিলিয়ে দেন। যাদের অল্পবিস্তর অর্থ আছে তারা জীবনের শেষ পর্যায়ে বৃদ্ধাশ্রমে অতিবাহিত করেন। চোখের জল নিয়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করেন। আর যারা সন্তানকে সবকিছু দিয়ে নিঃস্ব তাদের স্থান হয় খোলা আকাশের নিচে। অথচ প্রত্যেক বয়স্ক নাগরিকের মর্যাদাসহ বেঁচে থাকার অধিকার আছে। এই অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু প্রবীণরাই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নন। প্রবীণরাই প্রস্তুত নন। যার ফলে জীবনের শেষ পর্যায়ে বৃদ্ধাশ্রমে অতিবাহিত করেন। চোখের জল নিয়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করেন। বার্ধক্য মানুষের জীবনে আসে আসবে। এটা যেন সবাই ভুলেই থাকেন। কিন্তু এই ভার্ধক্যই মানুষকে নিঃস্ব করে দেয়। সমাজ পরিবার থেকে বঞ্চিত হয়। বৃদ্ধ অবস্থায় পিতা-মাতাকে সন্তানের কাছ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন প্রণয়ন করে সরকার। পিতা-মাতার ভরণপোষণ না করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে। এরপরেও বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় যেন অসহায় প্রবীণ নাগরিকরা অর্থাৎ বৃদ্ধ পিতা-মাতারা। তাই তো জাতিসংঘ প্রবীনদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বার্ধক্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে পহেলা অক্টোবর দিনটিকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রবীণ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। এ বছরও যেন তার ব্যতিক্রম নয়। গোটা বিশ্বজুড়েই নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস। শুক্রবার এই প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ অনুষ্ঠানের। এদিনের এই অনুষ্ঠানে এজিএমসি এবং জিবিপি হাসপাতালের প্রবীণ চিকিৎসক এবং হাসপাতালের প্রবীর রোগীদের জানানো হয় সংবর্ধনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব রাঠোর সন্দীপ রেয়াজি, মেডিকেল এডুকেশনের অধিকর্তা এইচ পি শর্মা, এন এইচ এম এর মিশন অধিকর্তা দিলীপ কুমার চাকমা, এজিএমসির প্রিন্সিপাল অনুপ কুমার সাহা, এম এস শংকর চক্রবর্তী সহ আরো বিশিষ্টজনেরা।
Leave feedback about this