2025-08-31
Ramnagar, Agartala,Tripura
দেশ বিশ্ব

মোদি-শি আলোচনায় ফলাফল: সীমান্তে শান্তি, যাত্রা ও বিমান চলাচল পুনরায় চালু

জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- ভারত-চীন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রবিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন। সাত বছরেরও বেশি সময় পর চীনে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফরের সময় তিয়ানজিনে শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পারস্পরিক বিশ্বাস, সম্মান এবং সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদি।

সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিরসনের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।” দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা দীর্ঘদিনের উত্তেজনা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

মোদি হিন্দু, জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র কৈলাস মানসরোবর যাত্রার পুনরায় শুরু হওয়ার কথা তুলে ধরেন। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এই যাত্রা বন্ধ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে চীনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নবায়ন না হওয়ায় তা চালু হয়নি। “কৈলাস মানসরোবর যাত্রার পুনরায় শুরু ভারতে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে,” বলেন মোদি। ভারত সরকার প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস এবং সিকিমের নাথু লা পাস দিয়ে এই যাত্রার আয়োজন করে।

এছাড়াও, ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যা বাণিজ্য, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। দুই দেশ পর্যটক, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যম এবং অন্যান্য দর্শনার্থীদের জন্য ভিসা সুবিধা বাড়ানোর বিষয়েও একমত হয়েছে। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ, হিমাচল প্রদেশের শিপকি লা এবং সিকিমের নাথু লা পাস দিয়ে বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে, যা অর্থনৈতিক সহযোগিতার গতি বাড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি চীনের উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য প্রেসিডেন্ট শিকে ধন্যবাদ জানান এবং এসসিও’র সফল সভাপতিত্বের জন্য চীনকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “দুই দেশের ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থ আমাদের সহযোগিতার সঙ্গে জড়িত। এটি সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের পথ প্রশস্ত করবে।”

আজ সন্ধ্যায় তিয়ানজিনের মেইজিয়াং কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে এসসিও সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলনে অংশ নেবেন ভারত, চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান, বেলারুশ, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের নেতারা। সম্মেলনের শুরুতে একটি স্বাগত অনুষ্ঠান, ছবি তোলার পর্ব এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। মোদি এই সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

ভারত ২০১৭ সাল থেকে এসসিও’র সদস্য এবং ২০০৫ সাল থেকে পর্যবেক্ষক ছিল। এই সম্মেলন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ক্রয়ের জন্য ভারতের উপর ২৫% শুল্ক আরোপের পর। ভারত ও চীনের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতা পুনর্গঠনের এই পদক্ষেপগুলি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বিশ্বব্যাপী অগ্রগতির জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service