জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :-শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে বলেন, ভারত দ্রুত উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে এবং শীঘ্রই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে। তিনি আরও জানান, এই বছর শেষের মধ্যে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ চিপ বাজার কার্যক্রম শুরু করবে এবং দেশের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে নতুন দিগন্ত খুলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ‘মেড ইন ইন্ডিয়া 6জি’ প্রকল্পেও দ্রুত এগোচ্ছে। হয়তো ৫০-৬০ বছর আগে ভারতের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প গড়ে উঠতে পারতো, কিন্তু আমরা সেই সুযোগটি হারিয়েছি। কিন্তু আজ পরিস্থিতি পাল্টেছে। এখন আমাদের দেশে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরি হচ্ছে এবং এই বছরই দেশের বাজারে প্রথম চিপ আসছে।”
তিনি আরও জানান, “আজ ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতবর্ধমান বড় অর্থনীতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে ভারতের বৈশ্বিক বৃদ্ধিতে অংশীদারিত্ব প্রায় ২০ শতাংশ হবে। এই শক্তির মূল কারণ হলো গত দশ বছরে ভারতের অর্জিত মাইক্রোইকোনোমিক স্থিতিশীলতা।”
মোদি উল্লেখ করেন, “আমাদের ব্যবসায়িক ঘাটতি ৪.৪ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, করোনা মহামারীর মতো বড় চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও। আমাদের কোম্পানিগুলো এখন ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করছে। ব্যাংকগুলি আরও শক্তিশালী। মুদ্রাস্ফীতি কম, সুদের হারও কম। আমাদের চলতি হিসাবের ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে, বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ও অনেক বেশি। প্রতিমাসে লক্ষাধিক সাধারণ বিনিয়োগকারী SIP-এর মাধ্যমে বাজারে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও দিকনির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, “গত ১১ বছরে ৬০টির বেশি মহাকাশ মিশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই বছর আমরা ‘স্পেস ডকিং’ প্রযুক্তি অর্জন করেছি, যা ভবিষ্যৎ মিশনের জন্য একটি বড় সাফল্য। ‘গগনযান মিশন’-এর মাধ্যমে ভারত শীঘ্রই নিজের মহাকাশচারীদের মহাকাশে পাঠাবে। এতে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ছোট পরিবর্তন নয়, বড় রূপান্তরের দিকে এগোচ্ছি। আমাদের জন্য সংস্কার কোনো জোরপূর্বক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি আমাদের প্রতিশ্রুতি ও বিশ্বাসের পরিচয়। ”সংশোধিত আইন ও সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “সাম্প্রতিক সংসদীয় মনসুন অধিবেশনেও আমরা সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছি। ‘জন বিশ্বাস বিল ২.০’ পাস হয়েছে, যা জনগণের আস্থা ও জনগণ-সেবামূলক শাসনের সঙ্গে যুক্ত। ৬০ বছরের পুরনো আয়কর আইনও সহজ করা হয়েছে। খনন ও শিপিং-পর্ট সংক্রান্ত আইনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ব্রিটিশ সময় থেকে প্রযোজ্য ছিল। এই সংস্কারগুলি ভারতীয় নীল অর্থনীতিকে, বিশেষ করে পোর্ট-ভিত্তিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
খেলাধুলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতকে বড় খেলার আয়োজনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন জাতীয় ক্রীড়া নীতি আনা হয়েছে এবং খেলাধুলা অর্থনীতির পূর্ণাঙ্গ কাঠামো তৈরি হচ্ছে।”জিএসটি সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই সংস্কার আগামী দীপাবলি পর্যন্ত সম্পূর্ণ করা হবে। এতে জিএসটি আরও সহজ হবে এবং দ্রব্যের দামও কমবে।”
সমাপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ভারত ‘রিফর্ম, পারফর্ম, ট্রান্সফর্ম’ মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা শুধুমাত্র স্থির জলে পাথর ছোঁড়ার জন্য নেই; আমরা দ্রুতবাহিত নদীর ধারকেও ঘুরিয়ে দিতে পারি। আমাদের দৃঢ় সংকল্পই দেশের উন্নয়নের মূল শক্তি।”
Leave feedback about this