জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- মহালয়ার পূর্ণ লগ্নে রাজধানী আগরতলা শহরে বিভিন্ন রাস্তায় নেমেছে জনঢল । বিশেষ করে কলেজ টিলা এমবিবি কলেজ প্রাঙ্গন পরিণত হয়েছে মিলন মেলায় । নাচ গান সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেতে উঠেছে কলেজ ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা ।মহালয়া হল পিতৃপক্ষ এবং দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ। এর মাধ্যমে দুর্গাপূজা উৎসবের সূচনা হয়। দেবী দুর্গা এই দিন পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। বাঙালিরা ঐতিহ্যগতভাবে দেবীমাহাত্ম্যম্ শাস্ত্র থেকে স্তোত্র পাঠ করতে মহালয়ার দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে। মহিষাসুরমর্দিনী নামে পরিচিত গান এবং মন্ত্রগুলি শোনার জন্য প্রত্যেক বাঙালি পরিবার ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে। এটি দেবী দুর্গার জন্ম এবং অসুর রাজা মহিষাসুরের উপর তাঁর চূড়ান্ত বিজয়ের বর্ণনা দেয় । পিতৃপক্ষে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা করে ‘জলদান’ বা তর্পণ করা হয় এবং পরলোকগত পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রলয়কালে পৃথিবী এক বিরাট কারণ-সমুদ্রে পরিণত হলে শ্রীবিষ্ণু সেই সমুদ্রের উপর অনন্তনাগকে শয্যা করে যোগনিদ্রায় মগ্ন হন। এই সময় বিষ্ণুর কর্ণমূল থেকে মধু ও কৈটভ নামে দুই দৈত্য নির্গত হয়ে বিষ্ণুর নাভিপদ্মে স্থিত ব্রহ্মাকে বধ করতে উদ্যত হল। ভিত হয়ে ব্রহ্মা বিষ্ণুকে জাগরিত করবার জন্য তাঁর নয়নাশ্রিতা যোগনিদ্রাকে স্তব করতে লাগলেন। সৃষ্টি হয়ে দেবী শ্রীবিষ্ণুকে জাগরিত করলে তিনি পাঁচ হাজার বছর ধরে মধু ও কৈটভের সাথে মহাযুদ্ধে রত হলেন। পিতৃপক্ষ আর দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ হচ্ছে মহালয়া । ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ প্রতিপদ শুরু হয়ে পরবর্তী অমাবস্যা পর্যন্ত সময়কে পিতৃপক্ষ বলে। পুরাণ মতে ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসনে। তাই এই সময় তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু অর্পণ করা হলে তা সহজেই তাদের কাছে পৌছায়। তাই গোটা পক্ষকাল ধরে পিতৃপুরুষদের স্মরণ ও মননের মাধ্যমে তর্পণ করা হয়। যার চূড়ান্ত প্রকাশ বা মহালগ্ন হল মহালয়া, পিতৃপক্ষের শেষ দিন। পরের দিন শুক্লা প্রতিপদে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। সেই দিন থেকে কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিনই হল দেবীপক্ষ। মহালয়া উপলক্ষে প্রতি বছর এই দিন ভোরবেলা মানুষ বেরিয়ে পড়ে রাস্তায় । একে অপরের সাথে মত বিনিময়ের পাশাপাশি মেতে উঠে এক অনাবিল আনন্দে । বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা , একসঙ্গে ঘুরাঘুরি আরো কত কিনা আনন্দে মেতে উঠেছে প্রত্যেকে । এদিন শুধু এমবিবি কলেজ নয় রাজধানীর গাংগাইল রোড , মহাকরণ রোড , লেক চৌমুহনী ও বিভিন্ন পার্ক গুলিতে দেখা গিয়েছে উপচে পড়া ভিড় । এই যেন এক আনন্দঘন মুহূর্তের সাক্ষী হতে চলেছে প্রত্যেকে ।, মূলত এই দিন থেকেই পূজোর আনন্দে মেতে উঠে বাঙালিরা । অনেকে মহালয়ার সকালে বের হয় নতুন জামা কাপড় পড়ে । পুজোতে কোথায় ঘুরতে যাবে প্ল্যানিং শুরু হয়ে যায় বন্ধু-বান্ধবীদের মধ্যে ।
Leave feedback about this