জনতার কলম ওয়েবডেস্ক:- বিহারের নগর পরিবহণে এক নতুন যুগের সূচনা হল। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেন রাজ্যের প্রথম মেট্রো পরিষেবা ‘পাটনা মেট্রো’, যা নগরবাসীর যাতায়াতে বড় পরিবর্তন আনবে। একই অনুষ্ঠানে তিনি রুকুনপুরা থেকে পাটনা জংশন পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ মেট্রো করিডরের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল আইএসবিটি ডিপো মেট্রো স্টেশনে। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পতাকা নেড়ে মেট্রোর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন এবং প্রথম মেট্রো ট্রেনে আইএসবিটি ডিপো থেকে ভূতনাথ স্টেশন পর্যন্ত সফর করেন। এসময় রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষও উচ্ছ্বাসে শামিল হন।
প্রথম ধাপে ৪.৩ কিমি পথে মেট্রো পরিষেবা!
পাটনা মেট্রোর প্রথম পর্যায়ে নিউ আইএসবিটি – জিরো মাইল – ভূতনাথ পর্যন্ত মোট ৪.৩ কিলোমিটার পথে পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এই অংশটি উদ্বোধনের পরই সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এ বছরের শেষের দিকে খেমনিচক ও মালাহি পাকড়ি পর্যন্ত রুট সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
আধুনিক কোচ ও যাত্রী সুরক্ষা!
তিন কোচ বিশিষ্ট প্রতিটি ট্রেনে একবারে ৯৪৫ জন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রতিটি কোচে ১৪৭টি আসন, যার মধ্যে ১২টি আসন মহিলা ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত। ট্রেনে রয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি সিসিটিভি ক্যামেরা, জরুরি বোতাম ও চালকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা— যা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
চলাচলের সময়সূচি ও ভাড়া!
পাটনা মেট্রো প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ট্রেন পাওয়া যাবে, দৈনিক মোট ৪০–৪২টি ট্রিপ সম্পন্ন হবে।
আইএসবিটি থেকে জিরো মাইল পর্যন্ত ভাড়া ₹১৫
আইএসবিটি থেকে ভূতনাথ পর্যন্ত ভাড়া ₹৩০
প্রকল্পের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা!
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, “পাটনা মেট্রো শহরের যানজট অনেকটাই কমাবে এবং নাগরিকদের জন্য দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াতের সুযোগ তৈরি করবে।”
প্রকল্পটির মোট ব্যয় ₹১৩,৩৬৫ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে মোট ৩২.৫ কিলোমিটার রুটে ২৪টি স্টেশন নিয়ে মেট্রো নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে। প্রাথমিক ধাপে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার নির্ধারিত হয়েছে।
এই প্রকল্প পাটনার গণপরিবহণ ব্যবস্থায় এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা শহরের যাত্রীসুবিধা ও নগর অবকাঠামোকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
Leave feedback about this