জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- বিহার নির্বাচনী প্রচারে আরারিয়ায় গিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশাল জনসভায় ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এত বড় প্যান্ডেল কেউ তৈরি করতে সাহস পায় না, অথচ এখানে বাইরে যত মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন, ভিতরে তার থেকেও বেশি। হেলিকপ্টার থেকে নামার সময় দেখেছি—অসংখ্য মানুষ পায়ে হেঁটে সভামঞ্চের দিকে আসছেন। এই দৃশ্যই বলে দিচ্ছে বিহারের নির্বাচনের ফলাফল কী হতে চলেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ বিহারের উন্নয়নের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলিতে দীর্ঘ সারি, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে উচ্ছ্বাসের ছবি। মা-বোনেরা, যুব সমাজ—সকলেই উৎসাহ নিয়ে ভোট দিচ্ছেন। আমি সকল ভোটারকে অভিনন্দন জানাই এবং আবেদন করি, বেশি বেশি করে ভোট দিতে আসুন।”
এরপর মোদি অতীতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, “তোমাদের দাদু-ঠাকুরদার একটি ভোট বিহারকে সামাজিক ন্যায়ের মাটিতে পরিণত করেছিল। কিন্তু ৯০-এর দশকে রাজ্যে ফিরে আসে জঙ্গল রাজ—যেখানে শাসন মানেই ছিল পিস্তল, দুর্নীতি, অত্যাচার আর অব্যবস্থাপনা। ১৯৯০ থেকে ২০০৫—এই ১৫ বছর বিহারের ভাগ্য ছিনিয়ে নিয়েছিল রাজদ (RJD) শাসন।”
তিনি আরও বলেন, “জঙ্গল রাজের ওই ১৫ বছরে কতগুলি এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে? শূন্য। কতটি সেতু তৈরি হয়েছে কোশি নদীর উপর? শূন্য। কতটি পর্যটন কেন্দ্র, ক্রীড়া কমপ্লেক্স বা মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়েছে? সব উত্তর শূন্য। এমনকি একটি আইআইটি বা আইআইএমও আসেনি বিহারে। এক প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গ্রাস করেছে সেই দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি।”
প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, “এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার অক্লান্ত পরিশ্রমে বিহারকে সেই অন্ধকার থেকে টেনে তুলেছেন। ২০১৪ সালের ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার গঠনের পর উন্নয়নের গতি বহুগুণ বেড়েছে। পাটনায় আইআইটি ও এমস, বোধগয়ায় আইআইএম, ভাগলপুরে আইআইআইটি—এসবই বিহারের পরিবর্তনের প্রমাণ। এখন রাজ্যে চারটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও গড়ে উঠেছে।”
তবে মোদি সতর্ক করে বলেন, “আমাদের এই উন্নয়নের পথে বড় বাধা হলো অনুপ্রবেশকারীদের সমস্যা। এনডিএ সরকার সততার সঙ্গে তাদের শনাক্ত ও দেশ থেকে বহিষ্কারের কাজ করছে। কিন্তু রাজদ ও কংগ্রেস সেই অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করতে মরিয়া। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে রাজনৈতিক ভ্রমণে বেরোয়।”
বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রসঙ্গেও কংগ্রেসকে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা ছটঠি মাইয়ার পূজাকে নাটক বলে, তারা আসলে বিহারের সংস্কৃতিকে অপমান করছে। আমাদের মা-বোনেরা এই পবিত্র দিনে জল পর্যন্ত স্পর্শ করেন না, আর কংগ্রেসের নেতা সেটিকে উপহাস করেন।”
শেষে মোদি কটাক্ষ করে বলেন, “ক’দিন আগেই আমি রাজদ-কংগ্রেসের ভেতরের বিবাদের সত্যিটা প্রকাশ করেছিলাম। এখন সেই সংঘাত আরও বেড়েছে। কংগ্রেস উপমুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থীকে সামনে এনে নিজেই রাজদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। তারা এখন নিজেরাই বলছে—জঙ্গল রাজে সব থেকে বেশি অত্যাচারিত হয়েছিল দলিত, মহাদলিত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণি। নির্বাচন ফল ঘোষণার পর ওদের মধ্যে কী অবস্থা হবে, তা সময়ই বলবে।”





Leave feedback about this