জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ভারী বৃষ্টির কারণে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা শহর রীতিমতো জলাশয় পরিণত হয়েছে। আদালত চত্বর, পশ্চিম জেলা শাসকের অফিস থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনেও জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। জরুরী কাজে মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে যান, জল থাকার কারণে নিরাপত্তার রক্ষী বাহিনী এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহাকে পাম্পের নৌকায় করে বাড়ি থেকে অফিসে নিয়ে যান।
এই সময় বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যের এই ভারী বর্ষণের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান দক্ষিণ জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৩৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য জেলাতে প্রায় আড়াইশো মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমন বৃষ্টিপাত আগে আর কখনো হয়নি বলেও জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সদস্যরা রাজ্য জুড়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
পরিস্থিতিকে দ্রুত সামাল দেওয়ার জন্য এদিন সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহার সঙ্গে ফোনে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন জরুরী ভিত্তিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য পাঠানোর জন্য। খুব দ্রুত বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর বিশেষ টিম রাজ্যে আসবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি। তাছাড়া NDRF, SDRF ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় জলবন্দি নাগরিকদের উদ্ধারকার্য পুরোদমে চালু রয়েছে।
বিশেষ করে নদীর উপকূলবর্তী এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে তৎপরতার সাথে নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রশাসন সর্বতোভাবে জনগণের পাশে রয়েছে, অযথা বিভ্রান্তি ও গুজবে কান না দেওয়ার জন্যও জনগণের প্রতি আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যের আপামর জনগণের কাছে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে ও প্রশাসনকে সাহায্য করতে সবিনয়ে অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার কারণে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুজন নিখোঁজ রয়েছে বলে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি তরফে সহায়তা করা হবে। ভারী বৃষ্টির কারণে গোমতী জেলার রাজ্যের একমাত্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ডুম্বুর জলাশয়ের জলাধারে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক জল জমা হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় এলাকায় আগাম ঘোষণা দিয়ে জলাধার কর্তৃপক্ষ সুইজগেট খুলে বাড়তি জল ছেড়ে দিয়েছে।
না হলে জলাধারের বাঁধ ভেঙ্গে বড়সড়ো বিপর্যয় হতে পারত। প্রতিনিয়ত বৃষ্টি হলেও আগরতলা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে, তবে শহরের রাস্তা জলমগ্ন থাকার কারণে দূর দূরান্তে যাওয়া মানুষ বিমানবন্দরে যেতে পারছেন না বলেও সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে প্রশাসন সহ সাধারণ মানুষ।
Leave feedback about this