2025-01-14
Ramnagar, Agartala,Tripura
রাজ্য শিক্ষা

পৃথিবী যতই আধুনিক হোক, বইয়ের গুরুত্ব আগে যেমন ছিল এখনও তাই আছে : অর্থমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনেকেই ভেবেছিলেন বইয়ের কদর বোধহয় কমে গেছে। কিন্তু ৪৩তম আগরতলা বইমেলা প্রমাণ করে দিয়েছে বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ মোটেও কমে নি বরং বেড়েছে। আজ হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে ৪৩ তম আগরতলা বইমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় একথা বলেন।

তিনি বলেন, অজানাকে জানার সুযোগ ঘটে বইয়ের মাধ্যমে। পৃথিবী যতই আধুনিক হোক, বইয়ের গুরুত্ব আগে যেমন ছিল এখনও তাই আছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে বিষয়টি প্রতিফলিত হচ্ছে। রাজ্যেও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল যুগ প্রবেশ করছে। ইতিমধ্যেই সারা রাজ্যে ই-ফাইলিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

রাজ্য বিধানসভায় পেপারলেস প্রথা চালু হয়েছে। কিন্তু এসবের মাঝেও বইয়ের চাহিদা একটুও কমেনি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বইমেলাকে কেন্দ্র করে অনেক গুণী মানুষের সান্নিধ্যে আসা যায়। দুর্গাপুজায় দশমীরদিন যেমন প্রত্যেকের মধ্যেই বিষাদের ছায়া দেখা যায় তেমনি বইমেলার শেষদিনেও আজ সবার মধ্যেই মন খারাপের বিষয়টি ফুটে উঠছে।

এ থেকে বোঝা যায় বইমেলাকে আমরা সবাই কত আপন করে নিয়েছি। তিনি বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার সমাজের সব অংশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চায়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামী বছরের বইমেলা আরও সার্থক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বইমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক অরুনোদয় সাহা বলেন, বইমেলার কোন বিকল্প নেই। বই জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। বিশিষ্ট সাহিত্যিক নরেশ চন্দ্র দেববর্মা বলেন, আগরতলা বইমেলাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের প্রকাশনা জগতে এক আমূল পরিবর্তন এসেছে। সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রেও বইমেলা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ডের সম্পাদক অজিত দেববর্মা বলেন, বইমেলা আমাদের সমাজ জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে গেছে। অল ত্রিপুরা বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী বলেন, একটা বইমেলা শেষ হবার পর রাজ্যের মানুষ আগ্রহ করে তাকিয়ে থাকেন কবে আবার পরবর্তী বইমেলা আসবে। এতেই বোঝা যায় বইমেলা আমাদের জীবনের সঙ্গে কিভাবে জড়িয়ে গেছে।

পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাখাল মজুমদার বলেন, আগরতলা বইমেলার পরিধি যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা খুবই আশা ব্যঞ্জক। এ রাজ্যের লেখক, প্রকাশকদের ক্ষেত্রে বইমেলা একটি অনুপ্রেরণার উৎসব।

স্বাগত ভাষণে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, বইমেলা হচ্ছে মেধা ও মননের উৎসব। বই আমাদের জ্ঞানের আলোকে উজ্জ্বল করে। এবছরের বইমেলায় ১৮০টি স্টল ছিল। এবছর প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মত বই বিক্রি হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। গতবছর ১ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার বই বিক্রয় হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, বইমেলা হচ্ছে মেধা, মনন এবং সৃজনশীলতার সম্মিলিত অংশ। অন্য যেকোন অনুষ্ঠানের সঙ্গে বইমেলার এটাই হচ্ছে পার্থক্য। বইমেলাকে কেন্দ্র করে সমাজ যেমন সমৃদ্ধ হয় তেমনি নিজের মেধারও বিকাশ ঘটে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, আগরতলা পুর নিগমের ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য প্রমুখ।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service