2024-12-20
Ramnagar, Agartala,Tripura
দেশ

গুরুতর অপরাধের মামলা থাকলে ভোটে প্রার্থী হওয়া যাবে না : নির্বাচন কমিশন

জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- ন্যূনতম পাঁচ বছর জেল হতে পারে, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অপরাধের যুক্ত থাকার মামলা বিচারাধীন থাকলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে এই বক্তব্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।তারা বলেছে, নির্বাচন-সহ সামগ্রিক রাজনীতিকে অপরাধমুক্ত রাখতে হলে এছাড়া কোনও উপায় নেই। কমিশনের বক্তব্য, মামলার চার্জগঠন হয়ে গেলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার হারাবেন। তবে এই বিধান কার্যকর হবে শুধুমাত্র ভোট ঘোষণার ছয় মাস আগে চার্জ গঠন হয়ে গেলে।প্রসঙ্গত, মামলায় চার্জ গঠন হল, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট রিপোর্ট বা চার্জশিটের ভিত্তিতে কোন কোন ধারায় বিচার হবে তা নির্ধারণ। বিচাকর এবং মামলার সব পক্ষের উপস্থিতিতে চার্জ গঠন সম্পন্ন হয়। তখনই ঠিক হয়ে যায় অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযুক্ত হলে সাজা কী হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তার ন্যূনমত পাঁচ বছর জেল হতে পারে, এমন ব্যক্তির ভোটে প্রার্থী হওয়া নিষিদ্ধ হোক দেশে।পাঁচ বছর জেলের সাজা সাধারণত দাঙ্গা-হাঙ্গামা, খুন, খুনের চেষ্টার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকা, দলবদ হামলার মতো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে হয়ে থাকে। এছাড়া শিশুর উপর যৌন লাঞ্ছনার অপরাধেও পাঁচ বছর জেলের সাজা হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্ট একাধিক মামলায় বলেছে, ন্যূনতম সাত বছর জেল হওয়ার মতো অপরাধগুলিই গুরুতর অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।যদিও দুটি মৌলিক কারণে কমিশনের প্রস্তাবকে ভয়ঙ্কর ও বিস্ময়কর বলে বর্ণনা করছে রাজনৈতিক মহল ও আইনজ্ঞদের একাংশ। তাদের বক্তব্য, ভারত-সহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নাগরিকের এই আইনি ও সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে যে আদালতে দোষী সাব্যস্ত এবং সাজা ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তারা নিরপরাধ। নির্দোষ ব্যক্তির কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যেতে পারে। যেখানে জেল থেকেও প্রার্থী হওয়ার অধিকার বহাল আছে দেশে।দ্বিতীয় আপত্তির জায়গাটি হল, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসা। অনেকেই মনে করছেন, প্রতিপক্ষকে ভোটে প্রার্থী হওয়া থেকে দূরে রাখতে কেউ মিথ্যা মামলা সাজাতে পারে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ভোট ঘোষণার ছয় মাস আগের মামলার ক্ষেত্রেই তাদের এই সুপারিশ কার্যকর হবে। কমিশনের সুপারিশে আপত্তি তুলে অনেকেই বলছেন, এটা রাজনীতিকদের স্বাভাবিক নাগরিক জীবন বিঘ্নিত করবে। মামলায় ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকবে, তেমনই রাজনৈতির রেষারেষি, মিথ্যা মামলার প্রবণতাও বৃদ্ধি পাবে।নির্বাচন কমিশনের এই বক্তব্য যদিও নতুন নয়। অতীতে একাধিকবার তারা নির্বাচনী আইন সংস্কারের মামলায় এই অভিমত প্রকাশ করেছে। আইন সংশোধনের অধিকার রয়েছে সরকারের। সংসদে আইন সংশোধনের প্রস্তাব পাশ করাতে হবে। এতদিন কোনও সরকারই কমিশনের এই সুপারিশ সম্পর্কে আগ্রহ দেখায়নি।কিন্তু বর্তমান সরকার কমিশনের সুপারিশ মেনে অগ্রসর হবে না, এমনটা অনেকেই মনে করছেন না। নরেন্দ্র মোদী সরকারের লোকসভায় চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। রাজ্যসভাতেও সরকারের পক্ষে স্বস্তিদায়ক সংখ্যা আছে।যে জনস্বার্থের মামলায় নির্বাচন কমিশন তাদের হলফনামায় নির্বাচন সংস্কারের এই প্রস্তাব পেশ করেছে সেটি দায়ের করেছেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বীনিকুমার উপাধ্যায়।হলফনামায় কমিশন বলেছে, তারা ফৌজদারী আইনের সাধারণ নীতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন যে একজন ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে নির্দোষ বলে গণ্য করা হয়। তবে প্রস্তাবিত সংশোধনী হবে জাতীয় স্বার্থে যা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে প্রাধান্য পাওয়া উচিত্‍। তারা আরও মনে করে কোনও তদন্ত কমিশনের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত।

হলফনামায় বলা হয়েছে, গুরুতর অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ভোট প্রক্রিয়া সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা বদ্ধমূল হয়ে উঠেছে। সাধারণের চোখে অভিযুক্ত ব্যক্তি সহজেই গণতন্ত্রের মন্দিরে প্রবেশ করছে।

Leave feedback about this

  • Quality
  • Price
  • Service