জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি:- ভারত বিগত ১৪ বছর ধরে পোলিও-মুক্ত থাকলেও প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে এখনও পোলিও ভাইরাসে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে নতুন করে সংক্রমণের খবর সামনে আসায়, এই রোগ ফের দেশে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই কারণেই দেশকে পোলিও-মুক্ত রাখার লক্ষ্যে রবিবার গোটা দেশের পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্যজুড়েও পালিত হলো পালস পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচি।
রাজ্যস্তরের মূল অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় আগরতলার মহারানী তুলসীবতী বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পালস পোলিও অভিযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে। এদিন শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সি প্রতিটি শিশুকে দুই ফোঁটা পোলিও টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুই ফোঁটা টিকাই শিশুদের ভবিষ্যতে হাত-পা অকেজো হয়ে যাওয়ার মতো মারাত্মক বিপদ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম।
পালস পোলিও কর্মসূচিকে সফল করতে রাজ্যের প্রতিটি এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। অস্থায়ী টিকাকরণ কেন্দ্র ছাড়াও স্কুল, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং বিভিন্ন হাসপাতালে বিশেষ টিকাকরণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। রাজ্যজুড়ে এই অভিযানে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সি মোট ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৭৪ জন শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের পালস পোলিও কর্মসূচিতে রাজ্যের ৩ হাজার ৪০৯টি টিকাকরণ বুথে মোট ১৩ হাজার ৬৩৬ জন টীকাদানকারী নিয়োজিত থাকবেন। পাশাপাশি, গোটা কর্মসূচির তদারকির দায়িত্বে থাকবেন ৬৮২ জন সুপারভাইজার। যেসব শিশু রবিবার টিকা নিতে পারবে না, তাদের জন্য ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পোলিও ডোজ খাওয়াবেন।
জেলা ভিত্তিক লক্ষ্য অনুযায়ী, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ৬৮ হাজার ৩৪৮ জন, উনকোটি জেলায় ২৮ হাজার ১০০ জন, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৩৬ হাজার ৩৮৯ জন, সিপাহীজলা জেলায় ৪৭ হাজার ৬৫৬ জন, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৪৫ হাজার ৭৭২ জন, খোয়াই জেলায় ২৯ হাজার ৯৪৮ জন, গোমতী জেলায় ৩৬ হাজার ৯৭৬ জন এবং ধলাই জেলায় ৪৭ হাজার ৬৮৫ জন শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা সাজু ওয়াহিদ এ, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলা শাসক ও সমাহর্তা ডাঃ বিশাল কুমার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ দেবশী দেববর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক অধিদপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস সহ একাধিক প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা।


Leave feedback about this