জনতার কলম ওয়েবডেস্ক:- দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বৃহস্পতিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের আইটিও এলাকায় ধুলিকণা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে পোল-মাউন্টেড মিস্ট স্প্রে সিস্টেম উদ্বোধন করেছেন। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রথম দফায় আইটিও চত্বরে প্রায় ৩৫টি পোল-এ এই মিস্ট স্প্রেয়ার বসানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজধানীর ৯টি দূষণ-প্রবণ হটস্পটে মোট ৩০৫টি পোল-এ মিস্ট স্প্রে প্রযুক্তি বসানোর পরিকল্পনা চলছে। প্রতিটি পোল-এ পাঁচটি নোজল এবং প্রতিটি নোজলে ছয়টি ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকায় একটি পোল থেকে মোট ৩০টি স্প্রে পয়েন্ট তৈরি হবে। প্রতিটি পোল প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৮৪ লিটার পরিশোধিত জল ব্যবহার করবে। এর জন্য চারটি ৫,০০০ লিটারের স্টোরেজ ট্যাঙ্ক স্থাপন করা হয়েছে। শান্তি পথের ৯০০ মিটার এবং লোধি রোডের ৫০০ মিটার এলাকায় একই ধরনের ব্যবস্থা আগে থেকেই কার্যকর রয়েছে।
তিনি বলেন, “দূষণের বিরুদ্ধে এটি এক যুদ্ধ, এবং সরকারকে আরও শক্তিশালী করতে জনসাধারণের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। জল ছিটানোর পর এখন মিস্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, যা অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।”
মঙ্গলবারের রিভিউ মিটিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, দূষণ নিয়ন্ত্রণে কোনো ধরনের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, তাঁর সরকার দূষণকে ‘ইমার্জেন্সি মিশন’ হিসেবে বিবেচনা করছে এবং কঠোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সরকারি সংস্থাগুলির অবহেলায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিপিসিসি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দূষণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মান বজায় রাখতে ব্যর্থ সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে চ্যালান ও ভারী জরিমানা করতে। যেসব সংস্থা অনুমতি ছাড়া রাস্তা কাটছে বা ঠিকমতো রাস্তা পুনর্গঠন করছে না, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশও দেন তিনি।
দিল্লি সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দূষণ মোকাবিলার চলমান পদক্ষেপ পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা, মুখ্যসচিব রাজীব ভার্মা এবং বিভিন্ন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, দীর্ঘমেয়াদি লড়াই চলবে, তবে অবিলম্বে জরুরি পদক্ষেপ আরও জোরদার করতে হবে। সব বিভাগকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাস্তার গর্ত শনাক্ত ও পূরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাস্তা-মেরামতকারী সংস্থাগুলিকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে যে কোনো রাস্তা ভাঙা অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না।
পিডব্লিউডি-কে ১,৪০০ কিলোমিটার রাস্তা নেটওয়ার্কের গর্ত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেরামত করে ‘বিফোর-অ্যান্ড-আফটার’ ছবি অ্যাপে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিডিএ-কে রাস্তার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, খালি জমির আবর্জনা অপসারণ এবং তাদের বাজারগুলি দ্রুত এমসিডি-র হাতে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে।
দিল্লি মেট্রোকে এলিভেটেড করিডোরের নিচের ভাঙা রাস্তা দ্রুত মেরামত ও ধুলিনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা জানান, ‘৩১১ গ্রিন অ্যাপ’ আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে যাতে গর্ত, ধুলিকণা এলাকাসহ ব্রাউন জোনগুলিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। পাশাপাশি একটি ছয়মাসব্যাপী বিস্তৃত অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বিএস-৪ এর নিচের মানের যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং মেট্রো ব্যবহারে উত্সাহ দিতে ই-অটোর সংখ্যা বাড়ানো হবে। মিস্ট-স্প্রে প্রযুক্তির ইতিবাচক ফল পাওয়ায় এটি পুরো শহরে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Leave feedback about this