2025-05-20
Ramnagar, Agartala,Tripura
পর্যটন রাজনৈতিক

টাটা গ্রুপের কোনও হোটেল স্থাপনে এই প্রথম কোনও রাজ্য সরকারের সাথে টাটা গ্রুপের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো আজ

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- স্থাপনের লক্ষ্যে আজ টাটা গ্রুপের ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানি লিমিটেড এবং ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দপ্তরের মধ্যে লিজ এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে। ত্রিপুরা ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফরমেশন কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে রাজ্যে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের ধারাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই লিজ এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়। এই লিজ এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ. কে. চাকমা, পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত বাদল নেগি, মুখ্যমন্ত্রীর ও.এস.ডি. পরমানন্দ সরকার ব্যানার্জি, ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানি লিমিটেডের এরিয়া ডিরেক্টর অ্যান্ড জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত দাস প্রমুখ।

লিজ এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, টাটা গ্রুপের কোনও হোটেল স্থাপনে এই প্রথম কোনও রাজ্য সরকারের সাথে টাটা গ্রুপের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানি লিমিটেড পুরাতন রাজভবন পুষ্পবন্ত প্যালেসের ৭.৭৮ একর এলাকা জুড়ে হোটেল নির্মাণের কাজ শুরু করবে। হোটেলটিতে রাজন্য আদলের ১০০টি রুম থাকবে। ৪টি এক্সক্লুসিভ রুম নির্মাণ করা হবে। পর্যটকদের রাজকীয় অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য কয়েকটি সিগন্যাচার স্যুইট রুমও থাকবে। একেকটি রুমের আয়তন হবে ৪০ বর্গমিটার। এছাড়া থাকবে ওয়েলনেস এলাকা, সুইমিং পুল, বাচ্চাদের জন্য ক্লাব, ফিটনেস সেন্টার, ব্যাঙ্কোয়েট হল ইত্যাদি। ৬০০ বর্গমিটার জুড়ে কনভেনশন হল, ব্রেকআউট রুমস ইত্যাদিও নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে পুষ্পবস্ত প্যালেসটি সঠিকভাবে পরিচর্যা এবং পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন থাকবে। টাটা গ্রুপের হোটেল হওয়ার ফলে তাদের চেইনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের পর্যটকরাও রাজ্যে আসবেন।

হোটেল তৈরি হলে পর্যটন শিল্পের যেমন বিকাশ হবে, তেমনি হোটেল ও পর্যটন শিল্পের সাথে যুক্তদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই হোটেলটিতে স্থানীয় ২০০-এর বেশি ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে। রাজ্যে আগত পর্যটকরা ত্রিপুরার মহারাজাদের ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং রাজ্যের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। পর্যটকরা হোটেলে থাকার পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী মাতাবাড়ি, নীরমহল, ঊনকোটি পর্যটন কেন্দ্রগুলি সহ রাজ্যের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও ভ্রমণ করবেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য গৌরবময় দিন। এই হোটেল নির্মাণে কয়েকমাস পূর্বে মৌ স্বাক্ষরিত হয়। আজ লিজ এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরের মাধ্যমে এর কাজ মূলত শুরু হয়ে গেছে। ১৯১৭ সালে মহারাজা বীরেন্দ্র কিশোর মাণিক্য নির্মিত পুষ্পবন্ত প্যালেসটি পূর্বে রাজভবন ছিলো। নতুন রাজভবন নির্মাণ হওয়ার পর প্যালেসটি অব্যবহৃত অবস্থায় থেকে যায়। বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই প্যালেসটির সঠিক ব্যবহারের লক্ষ্যে চিন্তাভাবনা শুরু করা হয়। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরনের আধুনিকমানের ৫ তারা হোটেল রয়েছে। এই চুক্তির ফলে ত্রিপুরায়ও এই ধরনের হোটেলের পরিষেবা আগামীদিনে পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যেই পুষ্পবন্ত প্যালেসের রেট্রোফিটিংয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, রাজ্যে আগত পর্যটকরা শহর এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলি ভ্রমণের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও ভ্রমণ করবেন। ফলে শহর এলাকার মানুষের যেমন উন্নয়ন হবে পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার মানুষরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। প্রধানমন্ত্রীর এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত সংকল্পের দিশায় রাজ্য সরকারও রাজ্যের উন্নয়নের ধারাকে ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গঠনে এই ধরনের উদ্যোগ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, এই হোটেল স্থাপনের ফলে পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গঠনে সহায়ক ভূমিকা নেবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিতো, ইন্ডিয়ান হোটেল কোম্পানি লিমিটেডের এরিয়া ডিরেক্টর অ্যান্ড জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ. কে. চাকমা।

Leave feedback about this

  • Quality
  • Price
  • Service