জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- রাজ্যের সমস্ত জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণে রাজ্য সরকার আন্তরিক। শহর এলাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আগরতলা পুরনিগম সহ বিভিন্ন পুর সংস্থা ও নগরপঞ্চায়েতগুলিও বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। আজ ভট্টপুকুরস্থিত আপনজন ক্লাব প্রাঙ্গণে অমরত ২.০ প্রকল্পের অধীন ৪৭টি ডিপ টিউবওয়েলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন৷ তাছাড়াও অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ৩১টি আয়রন রিমুভ্যাল প্ল্যান্ট, ২৫৮ কিমি পানীয় জলের পাইপলাইন সম্প্রসারণ এবং ১৬ হাজার এবং ১৬ হাজার ২২৪টি পরিবারে টেপের মাধ্যমে পানীয় জলের সংযোগ প্রদানেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুরনিগম এলাকার ২৬টি ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত করা হবে। বাকী ওয়ার্ডগুলোতে ইতিমধ্যেই পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগরতলা পুরনিগম এলাকার প্রায় ৬৪ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ প্রদানের কাজ করেছে পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর। অমরুত ২.০ প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শেষ হলে তা। ২ শতাংশে পৌঁছাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
ও অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জল মানুষের জীবন ধারণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই জলের অপচয় রোধে সকলকেই সচেতন থাকতে হবে। আগরতলা পুর নিগম সহ বিভিন্ন পুর সংস্থা ও নগরপঞ্চায়েতগুলো নাগরিকদের মৌলিক “পরিষেবা প্রদানে প্রদানে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (আরবান) প্রকল্প রূপায়ণে অসাধারণ সাফল্যের জন্য ত্রিপুরা রাজ্য উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বেস্ট পারফরমিং স্টেট হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ সার্ভে ২০২২ অনুসারে ছোট রাজ্যগুলোর মধ্যে ত্রিপুরাকে সবচেয়ে স্বচ্ছ রাজ্য হিসেবে দেশের রাষ্ট্রপতি পুরস্কৃত করেছেন৷ ইন্ডিয়ান স্বচ্ছতা লীগ-এর অধীনে স্পেশাল মেনশনস ও লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ ক্যাটাগরিতে আগরতলা পুর নিগমকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
শহর এলাকার উন্নয়নে রাজ্য সরকার যে আন্তরিক তা ২০২৩-২৪ বলেন, অর্থবর্ষের বাজেটেই প্রতিফলন হয়েছে। নগরায়ণের ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে মেটাতে রাজ্য সরকার
মুখ্যমন্ত্রী স্যাটেলাইট টাউন ডেভেলপমেন্ট স্কিম নামে নতুন একটি প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রকল্পে আগামী ৫ বছরে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আগরতলা, উদয়পুর এবং ধর্মনগরে
স্যাটেলাইট টাউন গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পের প্রাথমিক কাজের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে ১০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা শহর এবং রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলোতে সুয়েরিজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য এবারের বাজেটে ৫০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। পর্যটকদের আকর্ষিত করতে এবং বাণিজ্যিক কার্যকলাপ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৈলাসহরে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাণিজ্যিক সুবিধা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যের ১৯টি বিভিন্ন শহরে ৮ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সোলার হাইমাস্ট লাইটিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের পুরনিগমগুলোর পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে এবারের বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী নগর উন্নয়ন প্রকল্প নামে নতুন একটি প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে আগামী ৫ বছরে টুয়েপ-কে অন্তর্ভুক্ত করে ১৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এছাড়াও ৩ ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কমলপুর নগরপঞ্চায়েতের নতুন অফিস বিল্ডিংও নির্মাণ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার একটি জনকল্যাণমুখী সরকার। আর তা কাজের মাধ্যমেই প্রমাণিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, আগরতলা শহরের সৌন্দর্যায়ণ থেকে শুরু করে নিকাশী ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আগরতলা পুরনিগম গুরুত্বসহকারে কাজ করছে। শহর এলাকার প্রতিটি নাগরিককে মৌলিক পরিষেবা প্রদান করাই হচ্ছে আগরতলা পুরনিগমের অন্যতম লক্ষ্য। অমরুত ২.০ প্রকল্পটির সফল রূপায়ণ হলে আগরতলা পুরনিগম এলাকার প্রতিটি পরিবারে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছানো সম্ভব হবে। স্বাগত বক্তব্যে নগর উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা রক্তৃত পন্থ বলেন, অমরুত ২.০ প্রকল্পের অধীনে পুরনিগম এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৪৭টি ডিপ টিউবওয়েল, ৩১টি আয়রন রিমুভ্যাল প্ল্যান্ট, ২৫৮
কিমি পানীয় জলের পাইপলাইন সম্প্রসারণ সহ ১৬ হাজার ২২৪ টি পরিবারে টেপের মাধ্যমে পানীয় জলের সংযোগ প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পটি রূপায়ণে ১১৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে৷ অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নগর উন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং ও মুখ্য বাস্তুকার শ্যামলাল ভৌমিক।
Leave feedback about this