2025-02-04
Ramnagar, Agartala,Tripura
রাজ্য

গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে সমবায় ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে সমবায় ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রাজ্যের সার্বিক বিকাশে সমবায় ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার উপর রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১নং প্রেক্ষাগৃহে ‘সমবায়ের প্রচার ও উন্নয়ন’ বিষয়ক রাজ্যস্তরীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ-২০২৫ উপলক্ষ্যে ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া, রাজ্য সমবায় দপ্তর ও সমবায় ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গ্রাম শক্তিশালী হলেই দেশ ও রাজ্য সার্বিকভাবে শক্তিশালী হবে। প্রতিবছর রাজ্যে সমবায় সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সমবায় সপ্তাহ উদযাপনের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে সমবায় সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা। একই সঙ্গে সমবায়ের প্রগতির সাথে বেশি সংখ্যক মানুষকে একাত্ম করা। এ ধরণের সম্মেলন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মাধ্যমে আগামীদিনের দিশা-নির্দেশিকা ও রূপরেখা তৈরি করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা নেবে। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন সম্মেলনে সমবায়ের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলির পাশাপাশি ঘাটতিগুলিও আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। তিনি বলেন, ২০২১ সালে পৃথকভাবে সমবায় মন্ত্রক সৃষ্টি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সমবায় মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়ায় দেশে সমবায় ব্যবস্থা অনেকটাই প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, রাজ্যে সমবায় সমিতিগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সমবায়ের সাথে জড়িতদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগগুলি হলো কম্পিউটারাইজেশনের মাধ্যমে প্যাক্সগুলির শক্তিশালীকরণ, প্যাক্সগুলিকে বহুমুখীকরণের জন্য মডেল বিধি তৈরি করা, প্যাক্সের মাধ্যমে ই-পরিষেবা আরও সুচারুভাবে প্রদানের জন্য সিএসসি চালু করা, এফপিও গঠন করা, এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটারশিপ এবং নতুন পেট্রোল ও ডিজেল পাম্পের ডিলারশিপের জন্য ল্যাম্পস / প্যাক্সকে অনুমতি প্রদান ও প্যাক্সগুলিকে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সমৃদ্ধি কেন্দ্র হিসেবে উন্নতিকরণ।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমবায়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থান যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি সমবায় ব্যবস্থা সামাজিক মেলবন্ধন ও আত্মিক সম্পর্ককেও সুদৃঢ় করে। বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৪,৩০৫টি বিভিন্ন পেশাভিত্তিক সমবায় সমিতি রয়েছে। রাজ্যে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯ লক্ষেরও বেশি মানুষ বিভিন্ন সমবায় সমিতির কর্মকান্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে।

অনুষ্ঠানে সমবায়মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন, জাতি সংঘ ২০২৫ সালকে আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এরই অঙ্গ হিসেবে এই সম্মেলনের আয়োজন। সম্মেলনের মূল ভাবনা হচ্ছে রাজ্যে সমবায়ের প্রচার ও উন্নয়ন। সমবায় মন্ত্রক ‘সমবায়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধি’র ভাবনাকে সামনে রেখে ভারতে সমবায় আন্দোলনকে শক্তিশালী করা এবং সমবায়ের সুফলগুলো সর্বস্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরন্তর প্রয়াস নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি দিলীপ সাঙ্গানি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ২০২৫ সাল আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে সারা দেশে সমবায়ের উন্নতিকল্পে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরার আর্থিক ব্যবস্থার সমৃদ্ধিতেও সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। ভারতকে ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতিতে পরিণত করার স্বপ্ন পূরণে সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়ার চিফ এক্সিকিউটিভ ড. সুধীর মহাজন। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন সমবায় দপ্তরের সচিব তাপস রায়।

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে রাজ্যে অনুষ্ঠিত কো-অপারেটিভ ওলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। তাছাড়া দু’জনকে সান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পুরস্কার প্রাপকদের হাতে শংসাপত্র ও স্মারক উপহার তুলে দেন।

    Leave feedback about this

    • Quality
    • Price
    • Service