জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করল লিভারপুল। রবিবার অ্যানফিল্ডে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ৭-০ গোলে রেড ডেভিলসদের একেবারে খড়কুটোর মতোই উড়িয়ে দিয়েছে জুরগেন ক্লপের রেডসরা। বিরতির আগে তাও ১-০ এগিয়ে ছিলেন মহম্মদ সালহরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে গোলের বন্যা বইয়ে দেয় লিভারপুল। বিরতির পরেই হয় হাফ ডজন গোল। সেই সঙ্গে লিভারপুল গড়ে ফেলে নতুন রেকর্ড।
ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে এই জয় লিভারপুলের সবচেয়ে বড় জয়ের নজির। এর আগে ১৮৯৫ সালে দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে তারা ৭-১ জয় পেয়েছিল। কিন্তু এ দিন লিভারপুল ক্লিনশিট রাখে।
কডি গাকপো, ডারউইন নুনেজ, মহম্মদ সালাহ দু’টি করে গোল করেছেন। আর শেষ দিকে পরিবর্তে নামা রবার্তো ফিরমিনো ম্যান ইউনাইটেডের কফিনে সপ্তম পেরেকটি পোঁতেন।নিঃসন্দেহে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড সমর্থকদের কাছে দুঃস্বপ্নের একটি রাত হয়ে থাকবে। এ ভাবে লিভারপুল যে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাবে ম্যান ইউনাইটেডকে, সে কথা হয়তো তাদের ভাবনাতেও ছিল না। তাও প্রথমার্ধে রেড ডেভিলসরা পিছিয়ে থাকলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন সাইক্লোন বয়ে গেল অ্যানফিল্ডে।
এক সপ্তাহ আগেই লিগ কাপের শিরোপা জিতেছিল ম্যান ইউনাইটেড। ২০১৭ সালের পর এটি ছিল তাদের প্রথম কোনও শিরোপা। কিন্তু এ দিন লিভারপুলের বিরুদ্ধে ইউনাইটেডকে মাঠে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। ম্যাচের ৪৩ মিনিট পর্যন্ত রেড ডেভিলসরা কিন্তু লিভারপুলের চোখে চোখ রেখেই খেলেছে। এগিয়েও যেতে পারত তারা। কাসেমিরো লিভারপুলের জালে বলও জড়িয়েছিলেন। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়ে যায়। আর ইউনাইটেডের গোল বাতিল হওয়ার পরপরই গাকপোর ১-০ এগিয়ে দেন লিভারপুলকে।সেই যে রেডসরা গোলের মুখ খুলল, তার পর সালাহ, গাকপোদের তাণ্ডবে এ দিব ত্রাহি ত্রাহি রব তোলে ম্যান ইউনাইটেডের রক্ষণ ভাগ। সালাহর ইজিপ্ট বিশ্বকাপ খেলেনি। তবে কাতারের মাঠে এ বার দুরন্ত ফর্মে দেখা গিয়েছিল নেদারল্যান্ডসের গাকপোকে। আর রবিবার ক্লাবের জার্সিতে এই দুই তারকা মিলে কার্যত বুলডোজারের মতো গুঁড়িয়ে দিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ডিফেন্সকে।
বিরতির ঠিক আগেই ম্যাচের ৪৩ মিনিটের মাথায় লিভারপুলের হয়ে গোলের মুখ খোলেন ডাচ তারকা গাকপো। প্রথমার্ধে ১-০-তেই এগিয়ে ছিব লিভারপুল। এর পর দ্বিতীয়ার্ধের খেলার শুরু হতেই ওঠে ভয়ানক ঝড়। ম্যাঞ্চেস্টারের গোলশোধ তো দূরে থাক, লিভারপুলের আক্রমণের ঝাঁজে থরহরি কম্প দশা ক্যাসেমিরো-ভারানেদের। লিভারপুলের আক্রমণের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের।৪৭ মিনিটের মাথায় ২-০ করেন নুনেজ। এর ঠিক মিনিট তিনেক পরেই নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ৩-০ করেন গাকপো। এর পর ৬৬ মিনিটে লিভারপুলের হয়ে চার নম্বর গোলটি করেন সালাহ। ৭৫ মিনিটে ফের গোল করেন নুনেজ। ৮৩ মিনিটে ৬-০ করেন সালাহ। ৮৮ মিনিটে ব্রাজিলীয় ফিরমিনো ৭-০ করেন। এ রকম বিধ্বংসী জয়ের পর প্রথম চারে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করার আশাটা বাঁচিয়ে রাখল লিভারপুল।
এই হারের ফলে ইউনাইটেড ২৫ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্টেই আটকে থাকল। লিগ টেবলের তিন নম্বরে রয়েছে তারা। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে তারা পিছিয়ে ১৪ পয়েন্টে। সম সংখ্যক ম্যাচ খেলে লিভারপুলের পয়েন্ট ৪২। তারা এই মুহূর্তে রয়েছে পঞ্চম স্থানে। চতুর্থ স্থানে থাকা টটেনহ্যামের সঙ্গে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র ৩।
Leave feedback about this