জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :-
রাজ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় গত কয়েক বছরে অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। এরফলে শুধু প্রকৃত অর্থেই যোগাযোগের সুবিধা বাড়েনি, মানসিকস্তরেও যোগাযোগের ব্যবধান কমে এসেছে। রাজ্যে ব্রডগেজ রেল লাইন এসেছে এবং শীঘ্রই বিদ্যুৎ চালিত লাইনও এসে যাবে। আজ প্রজ্ঞাভবনে ‘কানেক্টিং ত্রিপুরা ফ্রম ল্যান্ড লকড টু ল্যান্ড লিঙ্কড’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধন করে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা একথা বলেন। সেমিনারে মুখ্য অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, শুধু তাই নয় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিভিন্ন সুবিধাও বাড়ছে। সম্প্রতি ভারতের যে সমস্ত রেল স্টেশন আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচিত হয়েছে তারমধ্যে রাজ্যেরও তিনটি রেল স্টেশন রয়েছে। শীঘ্রই ত্রিপুরা সরকারের প্রশাসন কাগজবিহীন হতে চলেছে যা এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে গণ্য হতে পারে। এজন্য যে ডাটা সেন্টার তৈরি হচ্ছে অন্য কোনও উন্নত ডাটা সেন্টারের তুলনায় তা কোনও অংশে কম হবে না। মুখ্যসচিব আরও বলেন, বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে কিন্তু তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না আমাদের আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকেও সমভাবে উন্নত করে আর্থিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করতে হবে। রাজ্যের সীমিত সম্পদকে ব্যবহার করে যাতে সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হয় সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ নিতে হবে।
সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থিমভিত্তিক বক্তব্য রাখেন পরিবহণ দপ্তরের সচিব উত্তম চাকমা। তিনি রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ভারত সরকারের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির অন্তর্গত ত্রিপুরায় যে ইন্টারনেট গেটওয়েটি হয়েছে তা দেশের মধ্যে তৃতীয়। বর্তমানে ১০টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলছে ত্রিপুরা এবং বিভিন্ন জায়গার মধ্যে।
আগরতলা-আখাউড়া রেল লাইন প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে নিশ্চিন্তপুরে একটি মডেল রেল ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। সাবরুমে এরকম একটি রেল ইয়ার্ড নির্মিত হচ্ছে। উদয়পুর, ধর্মনগর এবং কুমারঘাট রেল স্টেশনকে অমৃত ভারত স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে যেখানে উন্নতমানের সুবিধা দেওয়া হবে। এজন্য ব্যায় হবে ৯৬ কোটি টাকার বেশি। আগরতলা-আখাউড়া রেল লাইনের কাজ শেষের পথে এবং বহু নতুন লাইন ও পরিষেবার বিষয়ও আলোচনাধীন রয়েছে। রয়েছে। আগরতলা-চট্টগ্রাম রুটে বিমান পরিচালনার জন্য স্পাইসজেটকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং রাজ্য সরকার সেজন্য ১৫ কোটি টাকার ভায়েবিলিটি গ্যাপ ফান্ড ঘোষণা করেছে। সোনামুড়া-দাউদকান্দি জলপথের কাজও চলছে এবং জাতীয় সড়কের উন্নয়নেও সরকার সচেষ্ট।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ। তিনি ভারত-বাংলাদেশের ৫২ বছর পুরনো সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক কাজের সপক্ষে বক্তব্য রাখেন। তিনি রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিকস্তরে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আঞ্চলিক সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ত্রিপুরার ভৌগোলিক অবস্থানকে কেন্দ্র করে এখানে বাণিজ্যিক হাব গড়ে উঠার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এই অঞ্চলে পরিকাঠামো উন্নয়ন সহ সম্পদ ভাগিদারীর উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন বিশেষ করে নদী সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) এবং স্কুল অব লজিস্টিক, কমিউনিকেশন অ্যান্ড ওয়াটারওয়েস-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে, পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকগণ, বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি ও ছাত্রছাত্রীগণ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআইআই এনইসি-র কো-চেয়ারম্যান ড. পলিন খুদঙবাম৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন হেড অব স্কুল অব লজিস্টিকের সুশান্ত দত্ত।
Leave feedback about this