জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার সরকারি নির্দেশ জারি হয়েছে বহুদিন আগেই। পরিবেশ রক্ষা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে প্রশাসন বারবার অভিযান চালালেও এখনও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি অবৈধ প্লাস্টিকের কারবার। এরই মাঝে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন সোমবার বড় ধরনের সাফল্য পেল ইচাবাজার এলাকায়।
জেলা শাসক ড. বিশাল কুমারের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি বিশেষ দল আগরতলা লাগোয়া ইচাবাজারে অভিযান চালায়। সঙ্গে ছিলেন সদরের মহকুমা শাসক, খাদ্য দপ্তরের কর্মকর্তা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকরা। অভিযান চালিয়ে একটি গুদাম থেকে প্রায় ১৫–২০ টন অবৈধ প্লাস্টিক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
গুদামটির মালিক হিসেবে স্থানীয় ব্যবসায়ী অরুন কুমার ঘোষের নাম উঠে এসেছে। বাজেয়াপ্ত প্লাস্টিকের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০ বস্তা, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না। স্থানীয় বাজার, পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরো বিক্রেতাদের একটি চক্র এখনও চুপিসারে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। চাহিদাও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে—কারণ প্লাস্টিক সহজলভ্য, সস্তা এবং একবার ব্যবহারযোগ্য।
পরিবেশবিদদের মতে, এই ধরনের অবৈধ প্লাস্টিক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করছে পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্য। পলিথিন পচে না, মাটির উর্বরতা নষ্ট করে এবং নদী-নালা আটকে বন্যার ঝুঁকি বাড়ায়। পাশাপাশি পশুপাখি থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত শিকার হচ্ছে নানা রোগের।
প্রশাসন জানিয়েছে, এই ঘটনায় গুদাম মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে অভিযান আরও জোরদার করা হবে যাতে ভবিষ্যতে অবৈধ প্লাস্টিক ব্যবসা রোধ করা যায়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত হলেও প্রশ্ন রয়ে যায়—এ ধরনের অভিযান কি যথেষ্ট? নাকি প্রয়োজন আরও কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতা? আপাতত ইচাবাজারের এই অভিযান প্রশাসনের সাফল্য হলেও, ত্রিপুরায় প্লাস্টিকমুক্ত পরিবেশ গড়তে এখনও দীর্ঘ পথ বাকি।
Leave feedback about this