জনতার কলম,ত্রিপুরা, আগরতলা,প্রতিনিধি:- গ্যাস সিলিন্ডার লিক হয়ে গুরুতর যুবতীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার হতে হল আত্মীয় পরিজনদের। জিবি থেকে ক্যান্সার হাসপাতালে বিভিন্ন পরিষেবা স্থানান্তরের দোহাই দিয়ে অগ্নিদগ্ধ যুবতীকে নিয়ে এই বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিংয়ে ছুটতে হয় তাদের। টানা প্রায় ১ ঘণ্টা সময় ধরে এখানে ওখানে ঘুরেও চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত জিবি হাসপাতাল সংলগ্ন রাজপথে ট্রলিতে অগ্নিদগ্ধ মেয়েকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন তারা। এ কেমন চিকিৎসা পরিষেবা? প্রশ্ন উঠতেই পারে! তাও আবার রাজ্যের অন্যতম বৃহত্তম রেফারেল হাসপাতাল বলে কথিত জিবির পরিষেবা ব্যবস্থা যখন সামনে এসে পড়ে তখন প্রশ্ন উঠাটাই স্বাভাবিক। যাদের আশা ভরসায় মরণ যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে সাতপাঁচ না ভেবে মানুষ সোজা সেখানে হাজির হন, তারাই যদি অমানবিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হন – তখন রোগী বা তাদের আত্মীয়রা যাবেন কোথায়? এমনিতেই কোভিড রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও জিবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই কদিন ধরে ব্যাপক অভিযোগ উঠছে। এরমধ্যে জিবির সার্জিকেল, অস্থি, নাক – কান – গলা, দন্ত, আকস্মিক দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা সহ কয়েকটি বিভাগ জিবি থেকে সরিয়ে ক্যান্সার হাসপাতালের নয়া ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই অবস্থায় সোমবার এক অগ্নিদগ্ধ যুবতীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হতে হল আত্মীয় পরিজনদের। চিকিৎসা তো দূর, এক বিল্ডিং থেকে আরেক বিল্ডিংয়ে রোগীকে নিয়ে যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা মূল্যবান সময় ব্যয় করতে হয় তাদের। কিন্তু এরপরও জুটে নি চিকিৎসা পরিষেবা। তাই বাধ্য হয়ে রোগীকে ট্রলিতে শুইয়ে জিবির প্রধান রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে হয় আত্মীয়দের। শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে পরবর্তী সময়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে গিয়ে অগ্নিদগ্ধা মেয়েটিকে উদ্ধার করে জিবিতে ভর্তির উদ্যোগ নেয়। আর এতে কোনক্রমে রেহাই পায় সেই অসহায় পরিবারটি। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দিন কয়েক আগে সিধাই মোহনপুরের কলাগাছিয়া এলাকার ১৮ বছরের যুবতী অমিতা শীল দাস জিবি সংলগ্ন ভাল্লুকিয়া টিলা এলাকায় মামার বাড়িতে বেড়াতে আসে। সোমবার সকালে আচমকা রান্না ঘরের গ্যাস পাইপ লিক হয়ে আগুন ধরে যায় অমিতার শরীরে। তার হাত সহ শরীরের কিছু অংশ পুড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই তার মামা সহ বাড়ির লোকজনেরা মেয়েটিকে জিবিতে নিয়ে আসে। কিন্তু জিবিতে আনার পর তাদের পাঠানো হয় ক্যান্সার হাসপাতালের বিল্ডিংয়ে। সেখানেও তাদের সঙ্গে চলে একের পর এক প্রহসন। একতলা থেকে দোতালা, আবার দোতালা থেকে একতলা করতে করতে আবার জিবির পথ দেখানো হয় তাদের।এভাবেই দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসার নামে তাদের চূড়ান্ত হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ তুলেন অগ্নিদগ্ধ যুবতীর আত্মীয়রা। তাই কোন উপায় না দেখেই রোগীকে নিয়ে মাঝ রাস্তার মধ্যে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয় তারা। তাই প্রশ্ন উঠতেই পারে রাজ্যের অন্যতম রেফারেল হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে। আর রোগীদের সাথে এহেন হেনস্থা বা হয়রানি করার ঘটনায় জিবি কর্তৃপক্ষই বা কি সদর্থক ব্যবস্থা নেবে? এর উত্তর সময়ই বলবে।