জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- অম্বুবাচী উপলক্ষে স্বামীদের মঙ্গল কামনায় সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছে মহিলারা।লক্ষীনারায়ন বাড়িতে আয়োজিত হয়েছে এ উপলক্ষে বিশাল মেলার। সকাল থেকেই দেখা গেল মহিলাদের উপচে পরা ভিড়। সিঁদুর খেলা সাধারণত ওড়িশা, বাংলা ও বিহারের একটি হিন্দু ঐতিহ্য যেখানে দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে বিবাহিত মহিলারা একে অপরকে সিঁদুর মাখিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন। পূজা শেষে বিজয়া দশমীর দিনে, বিবাহিত হিন্দু নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে ও পায়ের উপর সিঁদুর দান করে এবং তাকে মিষ্টি খাইয়ে দেন। তারপর তারা একে অপরের মুখে সিঁদুর মাখিয়ে দেয় এবং একে অপরকে মিষ্টি উপহার দেয়। পৌরাণিক মতে প্রায় ৪০০ বছরেরও পুরনো এই খেলা আজও পরম্পরা গত ভাবে চলে আসছে। তবে আসাম রাজ্যে অম্বুবাচীতে কামাখ্যা দেবীর মন্দিরে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে মহিলারা। কালক্রমে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ও ত্রিপুরাতেও অম্বুবাচীতে মহিলারা লক্ষীনারায়ন বাড়িতে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। যদিও পৌরাণিক একটি মতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই সময়ে মা কামাখ্যা দেবী ঋতুমতি হন। যার ফলে তিন দিন মহিলারা সিঁদুর ও আলতা পরা থেকে বিরত থাকে। যদিও অনেক বিবাহিত নারী যুগ যুগ ধরে এই প্রথাটিই মেনে আসছে।আবার কেউ কেউ উল্টো এই সময়ে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে। যাই হোক, ধর্মীয় আচরণ বিধি সম্পর্কে পুরাতন অনেক তথ্য রয়েছে।সেগুলি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক রয়েছে অনেক। যে যেটা রীতিনীতি হিসেবে মেনে আসছে সেটাই বর্তমান যুগে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। শুক্রবার অম্বুবাচীর দ্বিতীয় দিনে লক্ষ্মীনারায়ন বাড়িতে দেখা গেল সিঁদুর খেলার সেই দৃশ্য। তবে সিঁদুর খেলার মূল মাহিত্ম কি সেটা নিয়ে কিন্তু অনেক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। একশ্রেণীর মহিলারা বলছে সিঁদুর খেলার মানেই হল, তাদের স্বামী দীর্ঘায়ু হবে, স্বামীর মঙ্গল কামনার্থেই মূলত মহিলারা এই খেলায় মেতে উঠেন। আবার কোনও কোন মহিলা বলছে, সিঁদুর খেলা মানে শুধু স্বামীর মঙ্গল নয়, স্বামী পরিবার-পরিজন সমাজ দেশ ও দশের যাতে মঙ্গল সাধন হয়। দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে যাতে গোটা দেশের সমস্ত রাজ্যের মানুষ শান্তি সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার বজায় রেখে চলতে পারে। প্রসঙ্গত প্রতিবছর অম্বুবাচী উপলক্ষে রাজধানীর লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়িতে সাত দিন ব্যাপী আয়োজিত হয় মেলার।মেলায় প্রায় সারা রাজ্য থেকেই লোকজন আসে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে। দোকানিরা মেলার এই কয়টা দিনের জন্যই সারা বছর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। এ বছরও লক্ষীনারায়ণ বাড়ি চত্বরে চলছে বিশাল মেলা। ভক্তসমাগমও প্রচুর।