Site icon janatar kalam

শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স-এর শ্রদ্ধাপূর্ণ নিবেদন “হৃষিকেশ সাহা মেমোরিয়াল মেধা উৎসব ২০২২”

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স-এর শ্রদ্ধাপূর্ণ নিবেদন
“হৃষিকেশ সাহা মেমোরিয়াল মেধা উৎসব ২০২২”। শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স এই বছরের হৃষিকেশ সাহা মেমোরিয়াল মেধা উৎসব স্কলারশিপ তুলে দিয়েছে মুন সূত্রধরের হাতে- এই ছাত্রী এক ব্যতিক্রমী ও অসাধারণ মেধার দাবিদার । পড়ালেখায় ধারাবাহিকভাবে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করায় এই প্রতিশ্রুতিমান পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
নিজের যোগ্যতা আর মেধার ভিত্তিতে ত্রিপুরার ছোট শহর কমলপুর-এর মেয়েটি উচ্চতর শিক্ষার জন্য সর্ব ভারতীয় এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম হয়ে নতুন দিল্লির মিরান্ডা কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে। মুন সুত্রধর এর বাবা শ্রী হরিমোহন সূত্রধর পেশায় কাঠ মিস্ত্রি । দিল্লি তে থেকে এই কলেজে পড়াশোনার জন্য যে পরিমাণ খরচ হওয়ার কথা তা মুন এর পরিবার এর পক্ষে সব ব্যবস্থা করা অসুবিধের । হৃষিকেশ সাহা মেধা বৃত্তির মাধ্যমে তা সবই মেটানো হবে। তার গৃহশিক্ষক, বাণী কণ্ঠ শর্মা হলেন এমন একজন প্রচারের আলোয় না আসা শিক্ষক যিনি মুন সূত্রধরের মতো অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে গড়েপিটে তৈরি করার পিছনে এক মূল কারিগর। শিক্ষক হিসাবে তিনি যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রী তৈরিতে নিঃস্বার্থ অবদান রেখেছেন সেজন্য তাঁকেও সম্মানিত করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ হৃষিকেশ সাহার ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে “হৃষিকেশ সাহা মেধা উৎসব “ শীর্ষক এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। হৃষিকেশ সাহা তাঁর জীবদ্দশায়, তার কাজের মাধ্যমে মানুষের মন ও হৃদয়কে জুড়ে দিয়েছেন ।তিনি সুস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও খেলাধুলায় উৎকর্ষতা, সামাজিক কল্যাণ এবং সমাজের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সারাজীবন কাজ করে গেছেন। তিনি নিজে একজন মেধাবী ছাত্র এবং খেলাধুলায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। পড়াশোনায় অসাধারণ কৃতিত্ব ছিল এবং ব্যাডমিন্টনে তাঁর কলেজের (এমবিবি, আগরতলা) হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন । সেইজন্য, চ্যাম্পিয়নদের তৈরি হতে দেখেছেন এবং যখনই কারোর প্রয়োজন হত তখনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন।
ত্রিপুরা বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল-এর সক্রিয় সদস্য হিসাবে হৃষিকেশ সাহা আনন্দের সঙ্গে খেলাধুলার প্রচার এবং খেলোয়াড়দের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। আগরতলার রোটারি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে তিনি নিজের অবদান রেখে গিয়েছেন।
তিনি একজন উৎসাহী পর্যটক ছিলেন। ঘুরে বেড়ানো ছিল তাঁর কাছে সারা জীবনের জন্য এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। সমাজের জ্বলন্ত শিখা যিনি ‘হৃষি-দা’ নামে জনপ্রিয় ছিলেন, সেই তিনি সারা জীবনভর যা কাজ করে গিয়েছেন আজও সবাই তা শ্রদ্ধার সঙ্গে, সম্মানের সঙ্গে আর আনন্দের সঙ্গে স্মরণ করে। হৃষিকেশ সাহা সত্যিকার অর্থে সকলের আদর্শ ছিলেন। যিনি নিজের মনের ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে যা বিশ্বাস করতেন, সেই পথ ই দেখিয়ে গিয়েছেন। এদিন তাঁর স্ত্রী বেলা সাহা বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “আমার স্বামী সারা জীবন সুস্থভাবে ও আনন্দের সঙ্গে জীবনযাপন করতেন। এবং প্রত্যেকের জন্য তিনি এটাই কামনা করেছিলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন সকলে সুস্থ ও খুশি থাকলে সমাজও সুস্থভাবে গড়ে উঠবে।” তিনি আরো বলেন, ” তিনি তাঁর জীবদ্দশায় সক্রিয়ভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে উৎকর্ষতার জন্য কাজ করে গিয়েছেন।”
“সেজন্যই আজও সেই সব মানুষ তাঁকে স্মরণ করেন যাঁদের জীবন ওই মানুষটিকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। এবং তাঁরা আজও জীবনকে খুশিভাবে উৎযাপন করতে পারে।” —বলেন হৃষিকেশ সাহার ছেলে রূপক সাহা। তিনি আরো বলেন, “এ কারণেই আমরা বাবার জন্মবার্ষিকীতে স্বাস্থ্য শিবির, কম্বল তথা শীত বস্ত্র বিতরণ এবং মেধা উৎসবের সাথে স্মরণ করি। সমাজকে যিনি উজ্জ্বল আলোয় পথ দেখিয়েছেন তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানানোর এটাই সর্বোত্তম পন্থা বলে আমরা মনে করি।”মুন সূত্রধর ও বাণী কণ্ঠ শর্মা কে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন এর জন্য অফুরান শুভেচ্ছা জানিয়ে এক আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠান শেষ করা হয় ।

Exit mobile version