আগরতলার নবমীপূজার মূল আকর্ষণ ছিলো দুর্গাবাড়ির দুর্গাপূজা।এই মন্দিরে রাজন্য আমল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দুর্গাপূজা। প্রতি বছর এই মন্দিরে নবমী তিথিতে মহিষ বলি হয়। মহিষ ছাড়াও পাঠা বলি হয় এখানে। বলি দেখতে সকাল থেকে মানুষ ভীড় জমান মন্দির প্রাঙ্গণে। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশে মাঝে তিন বছর রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত এই দুর্গাবাড়ি মন্দিরে বন্ধ ছিল মহিষ ও পাঠাবলি। এবছর ফের নবমী পূজার দিন সমস্ত নিয়ম মেনে ও পাঠাবলীর আয়োজন করা হয় দুর্গাবাড়িতে। আর এই বলি দেখতে শুধু রাজধানী আগরতলার মানুষ নয়, ভিড় জমিয়েছিলেন বিভিন্ন মহকুমা থেকে আসা দর্শনার্থীরা। কিন্তু তাদের সেই আশা অপূর্ন থেকে গেল এদিন। আদালতের নির্দেশিকা মেনে বলি প্রথা সম্পন্ন করা হয় লোকচক্ষুর আড়ালে। রাজন্য আমল থেকেই চলে আসছে এই মহিষ বলি। বলির আগে অন্যান্য বারের মতো এবারও মহিষকে রাজপ্রথা মেনে জানানো হয় রাষ্ট্রীয় সালাম। এটাও ত্রিপুরার রাজ্য। রাজন্য আমল থেকে চলে আসা এই প্রথার কোন খামতি হয়নি এদিন। রাজার রাজত্ব নেই। কিন্তু তাই বলে হুজুর কোন খামতি থাকে না কোন বছর। সমস্ত রকম নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পালিত হয় দুর্গা বাড়ির পুজো। পুজোর সমস্ত দায়িত্ব থাকে রাজ্য সরকারের উপর। ভারত ভুক্তির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পূজোর সমস্ত দায়-দায়িত্ব এবং ব্যয় ভার রাজ্য সরকারের উপর ন্যস্ত থাকে। পদাধিকার বলে পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসক পূজার সেবাইত। আর তার অধীনে একটি পূজারচোনা বিভাগ রয়েছে। দুর্গা বাড়ির পূজার বিশেষত্ব হচ্ছে মন্দিরের রাজপুরোহিতের পাশাপাশি পূজায় অংশ নেন রাজ চন্তাই। উপজাতি পুরোহিতকে বলা হয় রাজচন্তাই, যিনি রাজপরিবারের খার্চিপূজা, কেরপূজাসহ অন্যান্য বিশেষ পূজার প্রধান পুরোহিত। তিনি বিশেষ পোশাক পরে পূজা করেন। মন্দিরের দেবী প্রতিমাকে পূজার সময় প্রতিবছর গার্ড অব অনার জানানো হয় রাজ্য পুলিশের তরফে। রাজন্য আমল থেকে এই রীতি চলে আসছে।