Site icon janatar kalam

যুবকরাই আগামী দিনে দেশের ভবিষ্যৎ, দেশ গড়ার মূল কারিগর: মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- যুবকরাই আগামী দিনে দেশের ভবিষ্যৎ। দেশ গড়ার মূল কারিগর। রাজ্যে এই প্রথমবার আয়োজিত জাতীয় সংহতি শিবির ২০২৫-র মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের যুবকদের মধ্যে পারস্পরিক বৈচিত্রময় সংস্কৃতির আদান প্রদানের মাধ্যমে দেশাত্মবোধের ভাবনাকে সুদৃঢ় করা। আজ আগরতলার পূর্বাশা কমপ্লেক্সের আরবান হাটে পাঁচদিনব্যাপী জাতীয় সংহতি শিবির ২০২৫ এর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। রাজ্য সরকারের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর এবং ত্রিপুরা স্টেট ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসের যৌথ উদ্যোগে এবং নয়াদিল্লী ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস এর সহযোগিতায় এই প্রথমবার ত্রিপুরাতে জাতীয় সংহতি শিবির আয়োজিত হচ্ছে। স্বাগতিক ত্রিপুরা সহ মোট ১৮টি রাজ্য জাতীয় এই সংহতি শিবিরে অংশগ্রহণ করছে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বছরের শিবিরের থিম হচ্ছে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’। স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস এর মূল নীতি হচ্ছে সদা প্রস্তুত থাকো। শিবিরের মূল উদ্দেশ্যগুলি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তরুণদের একত্রিত করে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে জাতীয় সংহতিকে সুদৃঢ় করা। বিভিন্ন ঐতিহ্য ও রীতিনীতি সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া, সামাজিক সমস্যার প্রতি তরুণ সমাজের সচেতনতা তৈরি করা, নেতৃত্ব, দলগত কাজ ও আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা। ভারতের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় উৎসাহ দেওয়া। এছাড়াও শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নে সহায়তা করা। এর মাধ্যমে যুব সম্প্রদায় আত্মনির্ভরতা, শৃঙ্খলা, দেশপ্রেম এবং সামাজিক দায়িত্ববোধের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠবে। এই শিবিরে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে লোক সংগীত, লোকনৃত্য, দেশাত্মবোধক গান, ফুডপ্লাজা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রদর্শনী, সংহতি গেমস, স্বচ্ছতা অভিযান, ক্যাম্পফায়ার ইত্যাদি।

মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা ত্রিপুরায় স্কাউটস ও গাইডসের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরায় স্কাউটস ও গাইডসের মোট সদস্য সংখ্যা ৬ হাজার ৭০ জন। মোট ইউনিট লিডার রয়েছেন ২১৪ জন এবং ওপেন রোভার এবং রেঞ্জার রয়েছেন ৩৬৫ জন। এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত সদস্য সংখ্যা হল ৩৮ জন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় স্কাউটস ও গাইডস সারা বছর বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি যেমন- নেশা বিরোধী প্রচার অভিযান, আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উদযাপন, স্বাধীনতা দিবসের প্যারাডে অংশগ্রহণ, রক্তদান শিবির, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ইত্যাদি সংগঠিত করে। এই শিবির বিভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও পরম্পরার মধ্যে অনন্য যোগসূত্র তৈরি করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, স্কাউটিং ও গাইডিং শুধুমাত্র ইউনিফর্ম পরিধান নয়, এটি এক দায়িত্ব, জাতি ও সমাজের প্রতি অঙ্গীকার।

অনুষ্ঠানে ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস এর মূল নীতি হচ্ছে সদা প্রস্তুত থাকো। এর মানে হচ্ছে দেশের স্বার্থে সর্বদা নিজেকে প্রস্তুত রাখা। পৃথিবীতে ভারতের মতো এমন দেশ পাওয়া যাবেনা যেখানে এত বৈচিত্র্যের সমাহার রয়েছে। এই বৈচিত্র্যই ভারতের ঐক্যের মূল ভিত্তি। নেশামুক্ত সমাজ, আত্মনির্ভর সমাজ ব্যবস্থা গড়ার ক্ষেত্রে স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ক্রীড়ামন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে দক্ষ করে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা এল ডার্লং। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসের সহকারী অধিকর্তা অনলেন্দ্র শর্মা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, বিধায়ক স্বপ্না দাস পাল। উল্লেখ্য, শিবির উপলক্ষ্যে একটি স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ উপস্থিতি অতিথিগণ। অনুষ্ঠানে বর্তমান প্রজন্মের এবং প্রবীণ স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস রাজ্য শাখার সদস্যদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়।

Exit mobile version