জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ইনটেক ত্রিপুরা চ্যাপ্টার এবং ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে খুমুলুঙে আজ থেকে দু’দিনব্যাপী মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের ১১৬তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের সূচনা হয়েছে। এ উপলক্ষে আলোচনাচক্র ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। আজ খুমুলুঙের নুটাই অডিটোরিয়ামে দু’দিনব্যাপী মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত সরকারের সময় রাজ্যে রাজ পরিবারকে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে দূর করে রাখা হয়েছিল। মহারাজাদের জনকল্যাণমুখী কাজকর্মকে কখনও প্রচারের আলোতে নিয়ে আসা হয়নি। বর্তমান সরকার ২০১৮ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই ত্রিপুরা বিমানবন্দরকে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের নামে নামকরণ করা হয়। তাছাড়া তাঁর জন্মদিনকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কামান চৌমুহনীস্থিত জিরো আইল্যান্ডকে মহারাজা বীরবিক্রম চৌমুহনী হিসেবে নামাঙ্কিত ও মহারাজার মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলার মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দরে মহারাজার একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। যা বর্তমান সরকারের ত্রিপুরার রাজ পরিবারের প্রতি সদ ভাবনাকেই প্রকাশ করে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কাজের মাধ্যমেই সবার বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়নে জাতি, জনজাতি, সকল ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক চিন্তাধারার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই এই রাজ্য আগামীদিনে মডেল রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হবে।
তিনি বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে কখনো রাজনীতি করা উচিৎ নয়। আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য ত্রিপুরা রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের যে ধারা আমাদের কাছে অর্পিত করে গেছেন তা আমাদের সকলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে রাজ্যের জাতি ও জনজাতিদের উন্নয়নে বহুমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, হীরা মডেলে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নতি হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের জীবন দর্শন ও কর্মজীবন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে সাংসদ কৃতি দেবী দেববর্মণ বলেন, ত্রিপুরা রাজ পরিবারের সদস্যরা সর্বদাই রাজ্যের আপামর জনসাধারণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমডিসি প্রদ্যুৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মণ ত্রিপুরা বিমানবন্দরকে মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুরের নামে নামাঙ্কিত করায় রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্য রাজ্যের জনজাতিদের আইনানুগ জমির অধিকার, বিমানবন্দর স্থাপন, রাজ্যের শিক্ষার বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
মহারাজার আধুনিক চিন্তাধারার ফলেই রাজ্য আজ অনেকটাই এগিয়ে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এডিসির মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য পূর্ণচন্দ জমাতিয়া, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গঙ্গাপ্রসাদ প্রসেইন, মহারাজ কুমারী প্রজ্ঞা দেববর্মণ প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ মহারাজা বীরবিক্রম কিশোরের জীবন দর্শন ও কর্মজীবন নিয়ে প্রদর্শিত চিত্র প্রদর্শনী এবং ট্র্যাডিশনাল ফুড স্টল উদ্বোধন করেন।